সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল বললে হবে না: প্রধানমন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার চলে জনগণের পয়সায় এটা মাথায় রাখতে হবে। ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’ বললে হবে না। যত্রতত্র যেখানে সেখানে একটা কিছু করে করে ফেলে দেওয়া না। কোনো জলাভূমি নদীখাল-বিল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রতিনিধিদের সব থেকে বড় কথা জনগণের আস্থা অর্জন করা, বিশ্বাস অর্জন করা। এটা যে করতে পারে তার কোনো অসুবিধা হয় না। আর যে সেটা করতে পারে না তাকে ব্যর্থ হতে হয়। ফেইল করতে হয়। তাই সেদিকে লক্ষ্য রেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি
তিনি আরও বলেন, একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের কাছে যে ওয়াদা দিয়ে এসেছেন সেটা আপনারা রক্ষা করবেন। আরেকটি বিষয়ে আপনাদের বলতে চাই, প্রকল্প গ্রহণ; এটা আমি দেখেছি আমাদের অনেক সরকারি অফিসাররাও থাকেন, নানা রকম বুদ্ধি পরামর্শ দেন। আর আমাদের কেউ কেউ মনে করেন এখানে একটা স্থাপনা করলেই তো ভাল, একটা কমিশন পাওয়া গেল বা কিছু পয়সা কামাই করা গেল; দয়া করে এই ব্যবস্থায় যাবেন না। আপনারা এলাকার জন্য কোনটা করলে আপনার পরিবেশ সংরক্ষণ হবে মানুষ উপকৃত হবে এবং সেগুলি দেখেই প্রকল্প গ্রহণ করবেন।
সরকার প্রধান বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাদের অর্থ সাশ্রয় করতে হবে অর্থ সাশ্রয় করেই কাজ করতে হবে। যেন জাতীয়ভাবে বাংলাদেশকে আরও আমরা উন্নত করতে পারি। প্রকল্প গ্রহণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে হবে। শুধুমাত্র একটা কাজ করে দিলাম আর সেখান থেকে কেউ কিছু পয়সা পেল এই চিন্তা করে দয়া করে প্রকল্প গ্রহণ করবেন না।
তিনি বলেন, মানুষের আত্মসামাজিক উন্নয়ন এবং শোষণ থেকে রক্ষা করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেন। একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্বভার তিনি হাতে নেন। তার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের মানুষের অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ব্যবস্থা করা; সেই স্বপ্ন নিয়ে তিনি স্বাধীনতা পর আমাদেরকে একটি সংবিধান দেন। মাত্র ১০ মাসের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আবারও আমরা ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশনকে শক্তিশালী করি। জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে যেন এগুলো গড়ে ওঠে সেই ব্যবস্থাটা আমরা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যখন ২০০৮-এ ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব, আমরা সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছি। প্রথমে তথ্যকেন্দ্র পরে ডিজিটাল সেন্টার করি। আজ সারা দেশে প্রায় ৮ হাজারের মতো ডিজিটাল সেন্টার আছে। যেখান থেকে মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সমগ্র গ্রামবাংলা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ওয়াইফাই কানেকশনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগটাও আমরা করে দিয়েছি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, শরীয়তপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. লায়েব উদ্দিন লাভলু, পঞ্চগড় পৌরসভা মেয়র জাকিয়া খাতুনসহ অনান্যরা।