চুক্তিভিক্তিক নিয়োগের জন্য তদবিরে ব্যস্ত রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির সহ আরও অনেক সচিব
রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির। ছবি সংগৃহিত
চলতি বছরের জুলাই মাসের মধ্যে অবসরে যাচ্ছেন রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির সহ এক ডজন সচিব। আর এই অবসরে যাওয়া নিয়ে সচিবালয়ে আমলাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। একদল চাচ্ছেন নতুন সচিব হতে আর একদল চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ। যে সমস্ত সচিব পদগুলো খালি হচ্ছে সেখানে যাওয়ার জন্য এবং কয়েকটি শীর্ষ পদের জন্য আমলাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এই প্রতিযোগিতার কারণে সচিবালয়ে এখন আলাপ-আলোচনা এবং নানা রকম জল্পনা কল্পনার ডালপালা মেলেছে।
বর্তমান রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবির অবসরে যাবেন চলতি মাসের ১৯ ফেব্রুয়ারি। তবে তিনি চাচ্ছেন আরো ২ বছরের চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ। এই জন্য তিনি সরকারের ওপর মহলে তদবির শুরু করেছেন। সূত্র জানায়, তিনি সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে দিয়ে ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।সূত্র আরো জানায়, রেল সচিব বর্তমান হেভিওয়েট সচিবদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হলো, জনপ্রশাসন সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব।
জানা যায়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হয়ে আসার পর বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সাথে সচিবের সম্পর্ক ভালো ছিল না। তিনি সচিব হয়ে আসার পর রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের দূরুত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, তার অন্যতম কারণ হলো স্বজনপ্রীতি। বাংলাদেশ রেলওয়ের বর্তমান মহাপরিচালক অবসরে যাচ্ছেন ১২ মার্চে। পরবর্তী মহাপরিচালক নিয়োগের জন্য সিনিয়র হিসাবে যিনি আছেন তাকে চাচ্ছেন না রেল সচিব। তিনি চাচ্ছেন তার কাছের কেউ এই চেয়ারে বসুক। রেলের মহাপরিচালক হতে ২য় গ্রেডের কর্মকর্তা হওয়া লাগে। রেল সচিবের পছন্দমতো না হওয়ায় তিনি ৩য় গ্রেডের একজন কর্মকর্তার ২য় গ্রেডের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এসএসবির জন্য প্রেরণ করতে গড়িমসি করছেন।
এর আগে একটি সংস্থার অনুসন্ধানে প্রশাসনের ২৯ সচিবের সন্তানরা বিদেশে থাকেন। তাদের কেউ পড়াশোনা করেন আবার কেউ পড়াশোনা শেষ করে স্থায়ী হয়েছেন।এই অনুসন্ধান রিপোর্ট টি ব্যাপক আলোড়ন সৃস্টি করেছিল । সেই ২৯ জন সচিবের মধ্যে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবিরের নাম ও আছে। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন রেলপথ সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীরের ছেলেসহ পুরো পরিবার।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে সচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ রেলভবনে এসে যোগদান করেন তিনি। তিনি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) থেকে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হয়েছেন। এখন কোনও কারণে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না হলে নতুন রেলসচিব দিতে হবে।
এছাড়াও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক অবসরে যাচ্ছেন মার্চের ৪ তারিখে।কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার আগামী মার্চের ১২ তারিখে অবসরে যাবেন।আর্থিক বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলিম উল্লাহর অবসরে যাওয়ার কথা ২০ মে। ১২ জুন অবসরে যাওয়ার কথা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সত্যজিৎ কর্মকারের। অন্যদিকে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল অবসরে যাবেন জুলাই মাসের ৩ তারিখে।
যে ১২ জন সচিব চুক্তিতে আছেন তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৫ জুলাই।গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াসিউদ্দিন মার্চের ১০ তারিখে চুক্তির মেয়াদ শেষ করছেন। নতুন করে তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো না হলে তিনিও অবসরে যেতে পারেন।