ইসি'র আমন্ত্রণে আসেননি পিটার হাস-প্রণয় ভার্মা
ছবি: সংগৃহীত
আর মাত্র তিন দিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলও মুখিয়ে আছে বাংলাদেশের নির্বাচনের অপেক্ষায়। আগামী রোববার (৭ জানুয়ারি) নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে বিদেশি বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্রিফ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ব্রিফিংয়ে চীন, রাশিয়া, জাপানসহ পশ্চিমা বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার আসলেও আসেননি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তবে দুজনই দূতাবাস থেকে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, মিশন প্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্রিফ করেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও আন্তর্জাতিক মিশন প্রধানসহ সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ জনের বেশি কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে রাশিয়া, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা সুইজারল্যান্ড, আর্জেন্টিনাসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার উপস্থিত ছিলেন।
কূটনীতিকদের ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। ভারত ও মার্কিন দূতদের সশরীরে উপস্থিত না থাকা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘হয়ত ওনাদের অন্য কোনো ইয়ে আছে। ওনাদের প্রতিনিধি আসছে। আমরা সবাইকে আমন্ত্রণ করি। আমাদের এখানে যতগুলো দূতাবাস আছে বা যতগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে। আমি আমার চোখের হিসেবে বলতে পারি, বেশিরভাগ আসছে। আমার মনে হয় ৫০-এর মতো হবে।’
ভোটের বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসার বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৬০ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক এসে পৌঁছেছেন। ১২৭ জন কূটনীতিকের আসার কথা। এ ছাড়া, ৭৩ জন বিদেশি সাংবাদিক অ্যাক্রেডিটেশন পেয়েছেন। বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে ১৭ জন এসে পৌঁছেছেন আজ এবং কালকের মধ্যে সবাই এসে পৌঁছে যাবেন। পর্যবেক্ষকদের আসা অব্যাহত রয়েছে।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা কম প্রশ্ন করেছেন। পশ্চিম দেশের দুই একজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি আমার বক্তব্য তাদেরকে বললাম, পাঁচ বছর পর পর ইলেকশন হয়। এমন একটা সুযোগ সব দেশের রাষ্ট্রদূতের হয় না। আমি নিজেও রাষ্ট্রদূত ছিলাম সুযোগ আসেনি। যেহেতু তারা সুযোগ পেয়েছে এই সুযোগটাকে তারা যেন ভালোমতো ব্যবহার করেন।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘আমি বলেছি— আপনারা আরও প্রশ্ন করতে পারতেন। কম করলেন কেন? এ বিষয়ে তারা (কূটনীতিকরা) জানিয়েছেন— ইসির সঙ্গে তাদের সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে। তারা অনেক আপডেটেড, তাই তারা প্রশ্ন কম করেছেন। বলে রাখা ভালো, তারা বেশ কয়েকবার দফায় দফায় মিটিং করেছে ইসির সঙ্গে। তাই সেগুলো তারা অনেকখানি ওয়াকিবহাল।’
ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা আশ্বস্ত হয়েছে কি না— জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘সেটা তারা বলতে পারবেন। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। এটাতো চেহারা দেখে বলা মুশকিল। তারা ইন্ডিভিজুয়ালি সেটিসফাইড কি না এটা বলা মুশকিল। তবে ইলেকশন কমিশন যথাসাধ্য বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। উনাদের পক্ষ থেকে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নাই। ৭ তারিখ যদি জনগণ ভোট দিতে আসে তাহলে উনাদের চেষ্টা সফল হবে।’
ভোটারদের ভোটে আনার ক্ষেত্রে চাপ প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন— এই ধরনের কোনো চাপ নেই, চাপ দেওয়ার সুযোগও নেই। তবে যারা ভোট বর্জন করেছে, ওদের পক্ষ থেকে ভোট না দেওয়ার জন্য ভোটারদের উপর একটা চাপ আছে।’