নাটক-গানের মাধ্যমে ‘আচরণ পরিবর্তনে’ ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প!
নাটক, গানের মাধ্যমে শিশু, কিশোর-কিশোরী, নারীদের সামাজিক ও আচরণ পরিবর্তনে তথ্য মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। ৪৫ হাজার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন নাটক ও গানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে। এ জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ইউনিসেফ অনুদান দিবে ২৬ কোটি টাকা। বাকি অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে। চার বছরে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশন ও তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে তথ্যমন্ত্রণালয় প্রথমে ১০৩ কোটি টাকা ব্যয় করতে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাঠিয়েছিলো পরিকল্পনা কমিশনে। তা যাচাই করে কিছু ভুল-ত্রুটি ধরা পড়ায় তা সংশোধন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে অর্থমন্ত্রণালয়ের কৃচ্ছসাধনের আদেশ আমলে নিয়ে অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় কমানো হয়েছে ৫৩ কোটি টাকা। কাজটি করতে ৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করেছে। পিইসি সভা হবে। সেখানেও কিছু কমতে বা বাড়তে পারে। প্রকল্পটি ২০২২ সালের থেকে জুলাই থেকে ২০২৭ সালের জুনে বাস্তবায়ন করা হবে।
সূত্র জানায়, এ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ বেতার, বিটিভি, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগ করে সামাজিক ও আচরণগত পরিবর্তন আনার জন্য উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশ ঘটিয়ে শিশু, কিশোর-কিশোরীদের সমস্যা নিরসনে ভূমিকা রাখা।
প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজ ধরা হয়েছে নাটক করা, গানের অনুষ্ঠান করা, স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা, স্পট ডকুমেন্টারি, চলচিত্র প্রদর্শনী, উঠান বৈঠক, ওরিয়েন্টশন সভা, ফিচার ও আর্টিকেল লেখা, নীতিনির্ধারকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা, মীনা কার্টুন, বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের ইস্যুভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন করা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে ৪৫ হাজার ৫টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। ১০টি আউটসোর্সিং সেবায় ব্যয় করা হবে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা। বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে ৫টি যানবহনে জ্বালানিখাতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। ৪৪৯টি মরিটরিং ও মূল্যায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন যানবহন মেরামতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ, জরিপে ১০ লাখ টাকা। এভাবে বিভিন্ন খাতে ৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
তা যাচাই করতে খুব তাড়াতাড়ি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। সভায় আর কিছু ভুল ধরা না পড়লে ৫০ কোটি টাকার কম হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এম মান্নান প্রকল্পটিতে অনুমোদন দিবেন এবং নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর অবগতির জন্য পরবর্তী একনেক সভায় উপস্থাপনা করতে হবে। এরপর জিও জারি করা হলে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সচেতনতামূলক এ ধরণের প্রকল্প চতৃর্থবার ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। আইএমইডি তাই সমজাতীয় প্রকল্প বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে। প্রকল্পটি প্রচারধর্মী। তাই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কিছুটা হলেও সচেতনতামূলক সাড়া পাওয়া যাবে।
আরইউ/এএস