রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহায়তার প্রতিশ্রুতি কম্বোডিয়ার
আসিয়ানের সভাপতি হিসেবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কম্বোডিয়া।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) টেলিফোন আলাপকালে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে এ প্রতিশ্রুতির কথা জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এদিন কম্বোডিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী প্রাক সোখোনের সঙ্গে কথা বলেছেন।
মন্ত্রী ড. মোমেন কম্বোডিয়ার আসিয়ানের সভাপতিত্ব গ্রহণ করায় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোনের আসিয়ানে মিয়ানমারের বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ এশিয়ান নেশন্স বা আসিয়ান হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট যা ১৯৬৭ সালের ৮ আগস্ট গঠিত হয়। উদ্যোক্তা সদস্য ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড। এরপর, ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, এবং ভিয়েতনাম সদস্যপদ লাভ করে।
১১ লাখ বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ যে 'বড় হৃদয়' প্রদর্শন করেছে তার প্রশংসা করে, প্রাক সোখোন এই বিষয়ে বাংলাদেশ যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তার জন্য তার সম্পূর্ণ উপলব্ধি এবং সহানুভূতি প্রকাশ করেন এবং একটি টেকসই সমাধান আনতে তার সর্বোত্তম প্রচেষ্টার আশ্বাস দেন।
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী এবং চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন উল্লেখ বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিবেশী একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে কম্বোডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্যায়ন করে।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন আসিয়ানের সভাপতি হওয়ায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনে কাজ করতে কম্বোডিয়ার জন্য একটি বড় সুযোগ। মিয়ানমারের এ সব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যারা বর্তমানে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার কম্বোডিয়ার সহকর্মীকৈ বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং বৃহত্তর অঞ্চলের জন্য সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কেও কথা বলেন। বাস্তুচ্যুত এ সব মানুষের কট্টরপন্থা, চরমপন্থার ঝুঁকির সম্পর্কে কথা বলেন।
উভয় মন্ত্রী রাজধানী ঢাকা এবং নমপেনের একটি বিশেষ রাস্তার পারস্পরিক নামকরণের জন্য বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীদের গৃহীত প্রশংসনীয় পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারশিপ স্ট্যাটাসের জন্য বাংলাদেশের বিড ত্বরান্বিত করতে কম্বোডিয়ার সহায়তার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধে, কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং এ বিষয়ে আসিয়ান সচিবালয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের আশ্বাস দেন।
ড. মোমেন তার কম্বোডিয়ার সহকর্মীকে বাংলাদেশ সফরের জন্য এবং আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গা জনগণকে সরাসরি দেখার জন্য একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ আমন্ত্রণ জানালে পরে তিনি সহজেই আমন্ত্রণটি গ্রহণ করেন। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী নববর্ষের শুভেচ্ছাও বিনিময় করেন।
আরইউ/এমএমএ/