বস্তিবাসীদের জন্য চাই নগর পরিকল্পনা: পবা
জলবায়ু-উদ্বাস্তু বস্তিবাসীদের জন্য তহবিল ও নগর পরিকল্পনার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বেসরকারী উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, পবা এবং কাপ আয়োজিত ‘জলবায়ু সংকটে নগর দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে এই দাবি জানান সংগঠনটির বক্তারা।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংলাপে অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন স্থপতি শাসসুল ওয়ারেস, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) এর সহ সভাপতি মাহবুবুল হক, বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান স্থপতি মোসলেহ উদ্দিন, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, গবেষক পাভেল পার্থ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ) এর সাধারণ সম্পাদক মো: তৈয়ব আলী, বাংলাদেশ গ্রীণ রুফ মুভমেন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী গোলাম হায়দার প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বারসিকের ফেরদৌস আহমেদ।
স্থপতি শামসুল ওয়ারেশ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ গৃহহারাদের বাসযোগ্য নগর ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য আমাদের মানবিক পরিকল্পনা ও দক্ষ নেতৃত্ব দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কেউ সব হারিয়ে শহরে এসে আরও ঝুঁকিতে পড়বে তা হবে না। তারা তো আর ইচ্ছে করে শহরে আসে না। এই মানুষেরা যখন গ্রামে ছিল তখন তারা ছিল সম্পূর্ণ মানুষ। এই মানুষরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শহরে আসে তখন সে সব হারায়।
তিনি বলেন, মানুষ কষ্ট সহ্য করতে পারে, কিন্তু কোনো অন্যায় সহ্য করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের নামে আজ মানুষের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। এই শেকড় হারানো উদ্বাস্তু গরিব মানুষের জন্য সঠিক তহবিল ও নগর পরিকল্পনাও জরুরি।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ঢাকাসহ দেশের সকল নগর দরিদদ্রের মৌলিক নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নগর দরিদ্রদের এলাকায় পরিকল্পিত বর্জ্যব্যবস্থা, বর্জ্য থেকে সম্পদ রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। পরিকল্পিত নগরকৃষির আওতায় নগর বস্তি ও নগর দরিদ্রদের যুক্ত করতে হবে। নগরবস্তি এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিরাপদ বিষমুক্তক খাদ্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখতে পারে আর এজন্য দরকার বহুমুখী সহযোগিতা ও পরিকল্পনা। নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য বিনামূল্যে নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা সেবা দরিদ্র বান্ধব এবং সহজলভ্য করতে হবে। নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানী, পয়ঃনিস্কাশন এবং বজ্র ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় নগর দরিদ্রদের জন্য বিশেষ ঝুকি ভাতা, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ঢাকা শহরের খাল, প্রাকৃতিক জলাশয়, উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, পার্ক, বিনোদন স্থল, শরীর চর্চা স্থল নগরের সকল শ্রেনী পেশার মানুষের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সংলাপে বক্তারা সুনির্দিষ্ট ৯ দফা দাবি পেশ করেন। সকলের সচেতনতা বাড়িয়ে দায়িত্বশীল নাগরিক আচরণের মাধ্যমে সবাইকে নিয়ে সকলের জন্য বাসযোগ্য নগর গড়ে তোলার আহবান জানান।