দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ-আর্জেন্টিনা সমঝোতা স্মারক সই
'দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠা'য় বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও উপাসনা মন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র নীতির আন্ডার সেক্রেটারি ক্লাউদিও হাভিয়ের রসেনওয়াইগ চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ভারতের নয়াদিল্লিতে বসবাসরত বাংলাদেশে নিযুক্ত আর্জেন্টিনা প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হুগো গোবি (উগো গোবি)।
মঙ্গলবার বিকালে দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা স্মারক সই করেন আর্জেন্টিনার আন্ডার সেক্রেটারি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম সচিব শাব্বির আহমদ চৌধুরী। এই এমওইউ দুই সরকারের মধ্যে নিয়মিত আলোচনার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত (নিবাসী নয়াদিল্লি, ভারতের) হুগো গোবি এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
প্রতিনিধি দলটি মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে আর্জেন্টিনার আন্ডার সেক্রেটারি বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা হস্তান্তর করেন।
১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় আর্জেন্টিনার বিখ্যাত কবি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর নেতৃত্বে আর্জেন্টিনায় আন্দোলনের কথা স্মরণ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন, কবি ওকাম্পো যুদ্ধের নিন্দা ও বাঙালির ন্যায়সঙ্গত সমর্থনে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপর একমত হয়। প্রতিমন্ত্রী কৃষি ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আন্ডার সেক্রেটারি জানান, আর্জেন্টিনা বাংলাদেশে সয়াবিন, গরুর মাংস ও সার রপ্তানির জন্য উন্মুক্ত। উভয় পক্ষই স্বীকার করেছে যে সার ও জ্বালানি সরবরাহে বর্তমান বিশ্বব্যাপী সংকট কৃষি উৎপাদনকে আরও ব্যাহত করতে পারে।
আর্জেন্টিনার আন্ডার সেক্রেটারি পররাষ্ট্র সচিবের (সিনিয়র সেক্রেটারি) সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং তারা উভয়েই পারস্পরিক স্বার্থ ও উদ্বেগের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র সচিব দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আর্জেন্টিনার আন্ডার সেক্রেটারি জানান, আর্জেন্টিনা ঢাকায় তার কূটনৈতিক মিশন খোলার বিষয়ে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। উভয় পক্ষ শিগগিরই বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের মধ্যে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করতে সম্মত হয়েছে।
আন্ডার সেক্রেটারি ব্যবসা-টু-ব্যবসা সম্পর্কের উপর জোর দেন এবং দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের অবিলম্বে বিনিময়ের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রতিনিধি দলটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদারের সঙ্গেও স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ে দেখা করেন।
বৈঠকের সময় উভয় পক্ষ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, কৃষি এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অব্যাহত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছে। উভয় পক্ষই আশাবাদী যে এই সফর দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করবে।
আরইউ/এসআইএইচ