দুই ফায়ার ফাইটারসহ ১৪ জন বার্ণ ইউনিটে
সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ দুই ফায়ার ফাইটারসহ ৭ জনকে রবিবার বিকেলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে আনা হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সযোগে শেখ হাসিনা বার্নে নিয়ে আসা হয় তাদের।
দগ্ধরা হলেন, ফায়ার ফাইটার গাউসুল আজম ও রবিন মিয়া। অন্যান্যরা হলেন, মাসুম মিয়া (৩৪), ফরমানুল ইসলাম (৩০), রুবেল মিয়া (৩৪), ফারুক (১৬) ও হোসেন মহিবুল্লাহ (২৭)। এ নিয়ে বার্নে ১৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর ইউনুস আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ দুই ফায়ার ফাইটারসহ বেসামরিক ৫ জনকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে সাতটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদেরকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্নে আনা হয়েছে। এখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা বার্নের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, আমাদের এখানে কিছুক্ষণ আগে চট্টগ্রাম থেকে ৭ জন এসেছেন। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ পর্যন্ত আমাদের এখানে দগ্ধ ১৪ জনকে আনা হয়েছে। সবারই ইনহেলেশন (শ্বাসনালী) বার্ন রয়েছে। তারা কেউই শঙ্কামুক্ত নন। এদিকে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। আগুনের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই শতাধিক মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। এখন ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। রবিবার সকালে যোগ দেয় সেনাবাহিনীর একটি দল। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপো ২৪ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি মূলত পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে। এখান থেকে পণ্য রপ্তানির জন্য কনটেইনারগুলো প্রস্তুত করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। ৩৮ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার সময় সেখানে ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় অন্তত ২০০ শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন বলেও জানা গেছে। তবে সেখানে ঠিক কত সংখ্যক মানুষ তখন ছিলেন তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি।