চীনে আন্দোলনে নিহত ছাত্র-শিক্ষক, ঢাকায় সংহতি প্রকাশ
চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শাহবাগে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সংহতি প্রকাশ।
শনিবার (৪ জুন) বিকাল ৩টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের স্মরণে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
সংহতি সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী চীনের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির প্রত্যক্ষ মদদে ১৯৮৯ সালের ৪ জুন তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছিল। তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সকল শহীদদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। চীনে আজও পর্যন্ত গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি একটি স্বৈরতান্ত্রিক দলে পরিণত হয়েছে। জীবন বিধ্বংসী অস্ত্র করোনা ভাইরাস ছড়ানোর অপরাধে আন্তর্জাতিক আদালতে চীনের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, ১৯৮৯ সালের ৪ জুন চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের স্বজনদের নিকট চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ট্যাংক- গুলি ব্যবহার করে ছাত্র-শিক্ষকদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। নিহত স্বজনদের পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যান্য রাজনেতিক দলগুলোকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে চীনে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের গণতন্ত্রকামী নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। জিনজিয়াং প্রদেশে রাষ্ট্রীয় মদদে আটকে রাখা ১০ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সংগঠনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদেরকে সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বিশ্বের সকল নির্যাতিত, নিপীড়িত ও গণতন্ত্রকামী মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘বিশ্বের বহু অংশে এখনো অবিচার ও নিপীড়ন চলিতেছে। দুনিয়ার যেখানেই মজলুম মানুষ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে, আমরা নিশ্চয়ই তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াব। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী বিশ্বের প্রতিটি নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’
ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন, ‘আজ সেই ভয়াল ৪ জুন তিয়েনআনমেন স্কয়ার গণহত্যা দিবসে চীনের সেই গণতান্ত্রিক আন্দোলন নিহত ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিকদের স্মরণের পাশাপাশি চীন সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশেও চীন আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামে চায়না কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে কিন্তু এখনো বিচার হয়নি। উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন প্রতিনিয়ত নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিশ্বের সকল দেশে চীনের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।’
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশ কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রোমান হোসাইন, সংগঠনের উপদেষ্টা রহুল আমিন মজুমদার, জহির উদ্দিন জালাল, ভাস্কর শিল্পী রাশাসহ প্রমুখ।
এসএম/এমএমএ/