জলবায়ু অভিবাসীদের পুনর্বাসনের ভার বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে নিতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জলবায়ু অভিবাসীদের পুনর্বাসনের ভার বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে ভাগ করে নিতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
শুক্রবার (৩ জুন) স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) আয়োজিত “শান্তির পরিবেশ: ঝুঁকির নতুন যুগে ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণ উত্তরণ সুরক্ষিত” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তৃতাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে জলবায়ুর প্রভাবে স্থানচ্যুতি বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জলবায়ু অভিবাসীদের পুনর্বাসনের বোঝা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভাগ করে নেওয়া উচিত বলে জোর দেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লাখ লাখ জলবায়ু অভিবাসী প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি ও শোষণের শিকার হয়। তাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথেষ্ট কাজ করছে না। জলবায়ু-নিরাপত্তা নেক্সাস ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি এনফোর্সমেন্ট মেকানিজম সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরির তাত্পর্যের উপর জোর দেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী মাতিলদা এরনক্রানসের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে আনতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সুইডিশ মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডারসেনের সঙ্গেও দেখা করেছেন এবং কীভাবে পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে ইউএনইপির সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফল প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করেন ইনগার অ্যান্ডারসেন। তিনি জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইউএনইপি কর্তৃক আয়োজিত জলবায়ু প্রযুক্তি তহবিল থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রস্তাব করেন।
"কোভিড-১৯ মহামারি থেকে একটি টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধার অর্জন" শীর্ষক নেতৃত্বের সংলাপে বক্তৃতাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের মধ্যে বিভাজন কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দেন।
তিনি জলবায়ু অভিযোজন, প্রশমন ও স্থিতিস্থাপকতায় বিনিয়োগ বাড়ানো, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবহারের ধরন পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক বাসস্থান ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি বন্ধ করার সুপারিশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ১৯৭২ সালের জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত স্টকহোম+৫০ আন্তর্জাতিক বৈঠকে অংশ নিতে সুইডেনের স্টকহোমে ৩ দিনের সফর করেন।
আরইউ/এসএন