নেদারল্যান্ডসেই থাকতে চান ‘নিখোঁজ’ কনস্টেবল রাসেল
সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণে গিয়ে 'নিখোঁজ' হওয়া সিএমপির দুই কনস্টেবলের মধ্যে একজন হলেন রাসেল চন্দ্র দে। দুবাই প্রবাসী ভাই সুভাষ চন্দ্রকে তিনি ফোনে জানিয়েছেন তিনি এখন নেদারল্যান্ডসে আছেন এবং দেশে ফিরতে চান না।
রবিবার (২৯ মে) রাসেলের বোন কমলা পাল গণমাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কমলা পাল বলেন, 'রাসেল আমাদের বড় ভাইকে ফোন করে বলেছেন তিনি নেদারল্যান্ডসে থেকে দেশে ফিরতে চান না।
তিনি বলেন, একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কিছুদিন আগে ফোন করে তিনি দাদার কাছে টাকা চান। কিন্তু দাদা টাকা দিতে রাজি হননি এবং তাকে দেশে ফিরতে বলেন। এক পর্যায়ে রাসেল ফোন কেটে দিয়ে নম্বর ব্লক করে দেন।’
রাসেল ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। তাদের বাড়ি কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পলাইন্না কাটা গ্রামে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, কক্সবাজার সিটি কলেজে পড়ার সময় কক্সবাজার জেলা থেকে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেন। তিনি বিবাহিত এবং তার একটি সন্তান আছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, বায়েজিদ বোস্তামী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ বেলায়াত হোসেনের নেতৃত্বে ৮ পুলিশ সদস্যের একটি দল গত ৯ মে বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডসে 'কুকুরের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ' শীর্ষক ১৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নিতে যায়। এরপর ২৪ মে রাসেল ও শাহ আলম ছাড়া দলের বাকি ৬ সদস্য দেশে ফিরে আসেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির উপকমিশনার (সদর) আমির জাফর সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা তাদের অবস্থান শনাক্তে কাজ করছি এবং দেশে ফেরত আনার চেষ্টা করছি।'
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া ওই দুই পুলিশ সদস্য সেখানে নিজের ইচ্ছায় থেকে গেছেন। এ বিষয়ে ফিরে আসা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) কামরুজ্জামান বলেছেন, ‘আমরা নিখোঁজ ওই দুই কনস্টেবলকে খুঁজছি। আমরা প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি। কনস্টেবল শাহ আলম ও রাসেল চন্দ্র দে এর কোনো বিপদ হয়েছে না কি, ইচ্ছা করেই তারা বিদেশে থেকে গেছেন, সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, আমরা ফিরে আসা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। ফিরতি ফ্লাইটের আগের দিন দুই কনস্টেবল হোটেল থেকে বের হন। এরপর তাদের অন্য সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তারা দেশে চলে আসেন।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা পুলিশ সদর দপ্তরকে কিছু তথ্য পাঠিয়েছি। সেগুলো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নিখোঁজ হওয়া ওই দুই কনস্টেবল নগর পুলিশের ডগ স্কোয়াড পরিচালনার দক্ষতা অর্জনে ৯ মে নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন। এরপর তারা আর ফিরে আসেনি।
তারা যদি ইচ্ছা করেই সেখানে থেকে যান, তাহলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, তাদের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। দূতাবাসের মাধ্যমে প্রতিবেদন পাওয়ার পর সংস্থার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএম/এসএন