আইইপিএমপি’তে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি টিআইবি’র
জ্বালানিখাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক উপায়ে প্রস্তাবিত ইন্ট্রিগ্রেটেড এনার্জি এন্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি) প্রণয়ন এবং একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপসহ প্রস্তাবিত আইইপিএমপি’তে কৌশলগতভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার (১১ মে) অনলাইন প্লাটফর্মে উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে টিআইবি এ দাবি জানায়।
টিআইবি বলছে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতির অংশ (অনুচ্ছেদ ১৮-ক)। প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যা টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ৭ এবং ১৩ অর্জনেরও পূর্বশর্ত।
কিন্তু সুলভ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহে সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি থাকা স্বত্তেও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি)-কে প্রাধান্য দিয়ে জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে পরিবেশগত সংকটাপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়।
কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছে টিআইবি।
এ লক্ষে টিআইবি ৭টি সুপারিশ দিয়েছে। সুপারিশগুলো হলো-
১. জ্বালানি খাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক উপায়ে প্রস্তাবিত ইন্ট্রিগ্রেটেড এনার্জি এন্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি) প্রণয়ন করতে হবে এবং একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপসহ প্রস্তাবিত আইইপিএমপি’তে কৌশলগতভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
২. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ বাতিল করতে হবে এবং ২০২২ সালের পরে নতুন কোনো প্রকার জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থায়ন না করার ঘোষণা দিতে হবে।
৩. জ্বালানি প্রকল্প অনুমোদন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সম্পাদন, ঋণের শর্ত নির্ধারণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে এবং এসংক্রান্ত সকল নথি প্রকাশ করতে হবে।
৪. জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের ক্ষতি রোধ এবং জীবন-জীবিকা ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় চলমান ঝুঁকিপূর্ণ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো স্থগিত করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ কৌশলগত, সামাজিক ও পরিবেশগত সমীক্ষা সম্পাদন সাপেক্ষে অগ্রসর হতে হবে।
৫. আইএনডিসি'র অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পরিকল্পনাধীন কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমিতে সোলারসহ নাবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ ও বিতরণ এবং ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রমে শুদ্ধাচার নিশ্চিত করতে হবে।
৭. প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত দুর্নীতির তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরইউ/এমএমএ/