২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত জন্মগ্রহণকারীরা ভোটার তালিকাভুক্ত হবেন
দুই বছরের অগ্রিম তথ্যসহ মোট তিন বছরের তথ্য সংগ্রহ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। মোট চার ধাপে সারাদেশে আগামী ২০ মে থেকে এ হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন শুরু হবে।
মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ভোটার তালিকা হালনাগাদ-২০২২ এর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও ছিলেন, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসর) আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবির খোন্দকার।
কবে কখন কীভাবে হালনাগাদ হবে:
প্রথম ধাপে ১৪০টি উপজেলায় ২০মে হতে ৯ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ সময়ে নির্বাচন কমিশনের তথ্য সংগ্রহকারীগণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করবেন। এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে দুই বছরের অগ্রিম তথ্যসহ মোট তিন বছরের তথ্য নেওয়া হবে। যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে অর্থ্যৎ ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ কার্যক্রমে ২০০৫ সালের ১ জনুয়ারি বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৩, ২০০৬ সালের ১ জনুয়ারি বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে এবং ২০০৭ সালের ১ জনুয়ারি বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নিবন্ধিত ভোটার হিসেবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। হালনাগাদে সম্ভাব্য ভোটার বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫০ বলে ধারণা করা হয়েছে। এ ছাড়া, এর আগে বিভিন্ন কারণে যারা ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি তদেরও হালনাগাদে ভোটার করা হবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে মৃত ভোটারের তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। এসময় ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে
ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য যেসব ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে:
১) ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
২) শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
৩) পিতা/মাতার এনআইডির ফটোকপি
৪) ইউটিলিটি বিলের কপি।
এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রায় ৫৬ হাজার তথ্যসংগ্রহকারী এবং ১১ হাজার ৩০০ সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের দিনব্যাপী হাতেকলমে নিবিড়ি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞ কর্মকর্তাগণ তথ্যসংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার তালিকাভুক্ত হতে না পারে সে জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩২টি বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ কমিটির মাধ্যমে নিবন্ধন ফরম যাচাই-বাছাই করা হবে। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক সম্বলিত ডাটাবেসও ব্যবহার করা হবে।
দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্য- ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন, মহিলা ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন এবং হিজড়া ভোটার রয়েছে ৪৫৪ জন। ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল। এরপর ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে, তাদের নাম অন্তর্ভূক্তিসহ ২য় বার, ১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে তাদের অন্তভুক্তিসহ ৩য় বার এবং ২০১৮ সালে ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ ৪র্থ বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিশেষ কার্যক্রম হিসেবে ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে যাদের জন্ম অথবা ভোটার তালিকায় হালনাগাদের বিগত কার্যক্রমে বাদ পড়েছেন, তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ৫ম বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৬ষ্ঠ বার মাঠ পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। যাতে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সকল ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে অথচ ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিগত কার্যক্রমে বাদ পড়েছিল তাদের তথ্য হালনাগাদ করা হবে।
এসএম/টিটি