‘অশনি’র প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা
ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে মঙ্গলবার (১০ মে) খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে অশনির প্রভাব কতটা পড়বে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত। গড়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে গতিপথ পরিবর্তন করে সেটি কোন দিকে আঘাত হানবে, তা জানা যাবে মঙ্গলবার দুপুরের পর।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মৎস্য বন্দরে সকল মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। অশনি মোকাবিলায় ইতোমধ্যে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে আশ্রয়কেন্দ্রসহ একাধিক মেডিকেল টিম প্রস্তুত রেখেছে সরকার।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ ৬ ঘণ্টায় শক্তিক্ষয় হয়েছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টায় আরও শক্তিক্ষয় হবে ঘূর্ণিঝড়টির। ওড়িশা উপকূলের কাছে শক্তি হারাবে ‘অশনি’। ৬ কিলোমিচার বেগে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে এ ঘূর্ণিঝড়। তবে ল্যান্ডফলের আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, অশনি প্রথমে আঘাত হানতে পারে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। এরপর তা বাঁক নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ঢুকতে পারে ওড়িশায়। পশ্চিমবঙ্গে তেমন জোরালোভাবে আঘাত না হানলেও এই রাজ্যেও যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে। বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস বয়ে যেতে পারে।
অশনির প্রভাবে সোমবার (৯ মে) রাত থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়া জেলায় বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো হাওয়া। কলকাতার বহু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এরই মধ্যে পর্যটন এলাকা দীঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শংকরপুরসহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি প্রস্তুতি।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের।
এসএ/