৫০ হাজার বইয়ের সংগ্রহশালা ছিল মুহিতের
সদ্য প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত ছিলেন প্রচন্ড রকমের পড়ুয়া ও বইপ্রেমী একজন সহজ সরল মানুষ। এক কথায় বলা যায় বইয়ের পোকা। তার একটা উদাহরণও পাওয়া যায় সাবেক এই নন্দিত রাজনীতিকের ব্যক্তিগত লাইব্রেরির দিকে তাকালে।
বেশ কয়েকমাস আগে একটি মাল্টিমিডিয়া অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবুল মাল আবদুল মুহিত তার লাইব্রেরি প্রসঙ্গে নানা কথা বলেন ।
শুনলে অবাক হবেন, ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র বরণ্যে এই রাজনীতিকের ব্যক্তিগত সংগ্রহে আছে ৫০ হাজার বই। এমন ব্যক্তিগত সংগ্রহ আর কারও আছে কি না সন্দেহ। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত লেখকের বই আছে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে। নিজের বাসায় দুই হাজার ৬০০ স্কয়ার ফুটের একটি কক্ষকে তিনি লাইব্রেরিতে রূপান্তর করেছেন।
এ এম এ মুহিত পৃথিবীর যেখানেই গিয়েছেন সেখান থেকে সংগ্রহ করেছেন পুরনো সব বই। পুরোনো বইয়ের বাজারে ঘুরে বেড়াতেন আর দেখে দেখে সংগ্রহ করতেন পছন্দের লেখকদের বই। বইয়ের পোকা এই বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের নেশাই ছিল বই সংগ্রহ করা। আর এই বই সংগ্রহ করতে তাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।
বইয়ের পোকা মুহিতের সংগ্রহে যত বই আছে আর কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত সংগ্রহে এত বই নেই। তিনি এতটাই বইয়ের পোকা যে দেশে তার মত আরেকজন বই পোকা খুঁজে পাওয়া কিংবা তার কাছাকাছি একজন বই পোকা পাওয়া খুবই দুষ্কর। এমন কথা তিনি নিজেই বলেছেন ওই গণমাধ্যমকে।
কৈশোর বয়সেই বইয়ের সংগ্রহ শুরু করেন সদ্য প্রয়াত বরণ্যে এই রাজনীতিক। তিনি প্রথম বই সংগ্রহ করা শুরু করেন ১৯৪৯ সালে, যখন তার বয়স ১১ কি ১২ বছর তখন থেকেই।
তার সংগ্রহে থাকা বইয়ের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঞ্চয়িতা বইটি। যেটি তিনি ক্রয় করেছিলেন ১৯৪৯ সালে। একই সময়ে কেনা কাজী নজরুলের ইসলামের লেখা বই এখনও আছে তার সংগ্রহে।
বই কেনার পাশাপাশি মুহিত বই পুরস্কারও পেতেন। কলকাতা, নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটনে তিনি ফুটপাত থেকে যেমন বই কিনেছেন, তেমনি বইয়ের দোকান থেকেও বই কিনেছেন।
তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু শহর থেকে বই কিনেছেন। তবে নিউইয়র্কে গেলে তিনি সবচেয়ে বেশি যেতেন মাইলস এন্ড মাইলসসহ একাধিক বইয়ের দোকানে।
মুহিতের এই লাইব্রেরির ভবিষ্যত কী হবে সেটা জানা যায়নি। তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে গেছেন কি না সেটাও জানা যায়নিG পরিবারের সদস্যরা তার চিরবিদায় নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে পরিবারের কারও বক্তব্যও জানা যায়নি।
এনএইচবি/এমএমএ/