মন্ত্রী হয়েও জানেন না সংসদের নিয়মনীতি
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর যাবৎ সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা নামাজ স্থগিত রাখা হয়েছে। করোনা মহামারি কমলেও নতুন করে আর কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি সংসদ সচিবালয়ে। তাই সাবেক বা বর্তমান কোনো সংসদ সদস্য মারা গেলে সেখানে জানাজা হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না সংসদ সচিবালয়।
এদিকে সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত মারা যাওয়ায় প্রথমে তার ভাই এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছিলেন শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা হবে। এই সিদ্ধান্ত ছিল তার মিডিয়া ব্রিফিংয়ে জানানো কথা।
সংসদে জানাজা করতে হলে সেখানকার কমন শাখা ও প্রশাসন শাখায় জানানোর কথা। কিন্তু তাদের কেউ জানেন না। মৌখিকভাবে বা লিখিত কোনো মাধ্যমেই সংসদকে অবহিত করেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা করতে হলে আগে সংসদ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়। সেটি মৃত্য ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকেই সম্মতির কথা জানিয়ে থাকেন।
করোনার কারণে গত দুই বছর সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় কোনো জানাজা হয়নি। যেহেতু পুনরায় জানাজা করার জন্য সংসদ কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দেশনা দেয়নি। তাই এখনো পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ রয়েছে বলে ধরে নিয়েছে সংসদ সচিবালয়ের কমন শাখা। তাই তারাও কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেননি।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজার পর প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কোভিডের কারণে অ্যারেঞ্জমেন্ট ঠিক নাই। আমরা গতকাল সংসদের দক্ষিণ প্লাজা যখন ঠিক করেছিলাম, এই অ্যারেঞ্জমেন্ট দেখি নাই। দুই বছর সংসদে কোনো ইয়ে (জানাজা) হয় নাই। এটা জানা ছিল না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদের পরিচালক (গণসংযোগ) তারিক মাহমুদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, জানাজা হবে এই বিষয়টি তো আমরা জানি না। আমাদের তো কিছুই জানানো হয়নি। আমরা টিভিতে দেখেছি মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন সংসদে জানাজা হবে কিন্তু দক্ষিণ প্লাজায় যে হবে সেটা আমাদের কেউ জানায়নি। গত দুই বছর দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা হয়নি। এটি বন্ধ ছিল। নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি জানাজা হবে কি না। আর জানাজা আয়োজন করে কমন শাখা এবং প্রশান তাদের কাছে এ ধরনের বার্তা আছে বলে আমারা জানা নেই।
গণমাধ্যমের খবর দেখে সকালে জানাজা নামাজ পড়তে আসেন সিরাজুজ্জামান। তিনি মনিপুরি পাড়া গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই সংসদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের জেরার মুখোমুখি হোন।
পুলিশ সদস্যরা তাকে বলেন, এখানে কোনো জানাজা হবে না। গণমাধ্যমের খবরে জানতে পেয়ে আসছেন বলায় তারা বলেন আমাদের কাছে জানাজার কোনো মেসেজ নাই।
পরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রাতে টিভিতে দেখলাম সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা হবে সেটা দেখে আসছি। এসে জানতে পারলাম জানাজা হবে না। একজন সফল মন্ত্রী, ভাষাসংগ্রামী তার জানাজা নিয়ে এ রকম সিদ্ধান্তহীনতা কাম্য না।
এসএম/এমএমএ/