মুহিতের শেষ বিদায় নিয়ে এত বিশৃঙ্খলা কেন?
ভাষা সংগ্রামী ও সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মারা গেছেন। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় শূন্যতা রেখে গেলেন প্রবীণ এই নেতা। একজন ভাষা সংগ্রামী ও সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার শেষ বিদায় হওয়ার কথা রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার মধ্যেই, এমনটিই মনে করেন তার অনুসারীরা। তবে শেষ বিদায় নিয়ে যতটা বিশৃঙ্খলা হলো তাতে পরিবারের ব্যর্থতাও দেখছেন অনেকে। শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে মারা যাওয়ার পর তার ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় গুলশান আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা হবে। কিছু সময় এদিক সেদিক হলেও প্রথম জানাজাটি সেখানে হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা হওয়ার কথা ছিল। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় অনিবার্য কারণবশত সংসদের দক্ষিণ প্লাজার জানাজাটি বাতিল করা হয়েছে। এরপর দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখার কথা ছিল। পরে সময় পরিবর্তন করে জানানো হয় বিকাল ২টায় শহীদ মিনারে রাখা হবে।
সেই সময়ও ঠিক রাখা হয়নি। দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে ১টা ২০ মিনিট পর্যন্ত শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার জন্য রাখা হয়। সিডিউল অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোনো জানাজা হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ঢাকাপ্রকাশকে জানান, রাত ২টার সময় আমাদের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। আমরা সে অনুসারে ব্যবস্থা করেছি। সময় নির্ধারণ ও পরিবর্তন তার পরিবারের পক্ষ থেকেই করা হয়েছে।
সাবেক একজন সফল অর্থমন্ত্রী যার ভাই বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য তার মরদেহ সড়ক পথে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হবে এটা অনেকেই মানতে পারছেন না। সিলেট বিভাগের অনেকেই বলেছেন, সাবেক একজন মন্ত্রী যার ভাই বর্তমান মন্ত্রী তার জন্য একটা হেলিকপ্টার ভাড়া করা যেত না? কত টাকা লাগত। তারা যদি না পারত আমাদের বললেই আমরা দিয়ে দিতাম— এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একজন অনুসারী।
ঈদের সময় সড়ক পথে যানজট ঠেলে কিভাবে সিলেট পৌঁছাবে তা নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আজিজুল পারভেজ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, মুহিত সাহেবের মতো একজন সফল মানুষের মরদেহ সড়কপথের দীর্ঘযাত্রায় সিলেট নিয়ে যাওয়া হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। এখন সড়কপথে যে যানজট তাতে কখন লাশবাহী গাড়ি পৌঁছাবে তার কোনো ঠিক নেই। আর জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন নিয়ে যেভাবে সিডিউল বিপর্যয় হলো এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাবো বলে ঠিক করেছি কিন্তু ২টা ভেবে বের হয়ে শহীদ মিনার গিয়ে দেখি সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ। এটা কেন? তাঁর মতো একজন ভাষা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী, পণ্ডিত ও সফল মন্ত্রীর শেষ বিদায় নিয়ে এত বিশৃঙ্খলা কেন?
এসএম/আরএ/