আরও ৩২,৯০৪ পরিবার পাচ্ছে সেমিপাকা ঘর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল মঙ্গলবার ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি হস্তান্তর করবেন। ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য আবাসন নিশ্চিত করার সরকারি লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে এসব বাড়ি হস্তান্তর করা হচ্ছে।
রবিবার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব (পিএমও) মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
ওই ব্রিফিংয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া আরও বলেন, ‘সরকার ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি হস্তান্তর করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার পোড়াদিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, বরগুনা জেলার বরগুনা সদর উপজেলার খেজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার হাজীগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তর অনুষ্ঠানের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন।
তোফাজ্জেল হোসেন আরও জানান, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে আরও ৬৫ হাজার ৬৭৪টি একক ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। তৃতীয় ধাপে বাড়িগুলোকে আরও টেকসই ও জলবায়ু-সহনশীল করতে সরকার খরচ বাড়িয়েছে এবং নকশায় পরিবর্তন এনেছে। এখন ভূমি ও গৃহহীনরা ২ দশমিক ২ শতাংশ জমিসহ উন্নত মানের আবাস পাবেন।
তিনি বলেন, বাড়িগুলোকে আরও টেকসই ও দর্শনীয় করতে প্রতিটি বাড়ির জন্য খরচ ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
বাড়িগুলোকে আরও টেকসই করার জন্য সরকার শক্তিশালী গ্রেট-বিম, লিন্টেল ও রিইনফোর্সড কংক্রিট কলাম (আরসিসি) পিলারবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করছে।
পিএমওর জ্যেষ্ঠ সচিব আরও জানান, প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে মোট ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি একক বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর ২০২১-২২ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩টি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপের আওতায় চরাঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি প্রায় ১ হাজার ২৪২টি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বা বন্যার মতো যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিবেচনায় রেখে ঘরগুলো যাতে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা যায়, সে জন্য বিশেষ নকশা করা হয়েছে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধারণা অনুযায়ী আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে আবাসন কার্যক্রমের একটি বিশেষ সংযোগ রয়েছে। বিভিন্ন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একক বাড়ি নির্মাণ প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীন ১৯৯৭ সাল থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৮ হাজার ৩টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ১৫ জন (একটি পরিবারে আনুমানিক পাঁচজন ব্যক্তি হিসাবে)।
এ সময় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমএমএ/