শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে উজ্জীবিত বাঙালি

আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০২১। ঠিক ৫০ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর আল-বদর, আল-শামসরা। সেদিন বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

প্রতিবছর এই দিনটি আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেনতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবি সংগঠণ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শহিদ পরিবারের সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্র প্রধানের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালেহ উদ্দিন ইসলাম তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী দেশের মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

৫০ বছর আগে এই দিনে দেশের ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর চোখ বেঁধে নিজ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী ও লেখকসহ মাটির দুই শতাধিক কৃতী সন্তানকে। প্রথমে তাদের চোখ বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে টর্চার সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরবর্তীকালে, নতুন উদীয়মান বাংলাদেশকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করার জন্য তাদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে, বিশেষ করে রায়েরবাজার ও মিরপুরে হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর যারা খুনিদের রোষানলে পড়েন তাদের মধ্যে ছিলেন ডা. আলিম চৌধুরী এবং ডা. ফজলে রাব্বি, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজুদ্দিন হোসেন, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, সেলিনা পারভীন এবং সাহিত্যিক মুনীর চৌধুরীসহ আরও অনেকে। এরপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

 

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। একে একে সকল রাজনৈতিক দল পেশাজীবী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান ও কেন্দ্রিয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম (কামাল হোসেন অংশ), গণফোরাম (মন্টু-সুব্রত), গণসংহতি আন্দোলন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক ডা. নূরুল ইসলাম হাসিবের নেতৃত্বে ডিআরইউ সদস্যরা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বঙ্গবন্ধু কৃষিজীবী পরিষদ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ছাড়াও রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধেও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অনেকে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করার পাশাপাশি তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলেই এক সুরে কথা বলেন। অনেকে বলেন স্বাধীনতার স্বপ্ন এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানোর পর দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন,
‘মুক্তিযুদ্ধে আমরা যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক সেই সময় বাঙালির মেধা ও বিবেক হিসেবে খ্যাত বুদ্ধিজীবীদের জাতিকে মেধাশূন্য করে দিতে হত্যা করেছিল। সেদিন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরাজিত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে, বাঙালির কাছে। তাদের আন্তর্জাতিক যে প্রভু রয়েছে তারাও সেদিন পরাজিত হয়েছিল। আজকেও যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেই ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে এই বাঙালি জাতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে। এই হল বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রত্যয়।’

দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসররা। সব বুদ্ধিজীবীদের চেতনাকে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলক হক বলেন, ‘পালিয়ে থাকা বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের ফিরিয়ে আনতে সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আশ্রয়দাতা দেশগুলো তাদের দেশের রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কথা বলে তাদের হস্তান্তর করছে না।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা আন্তর্জাতিক চক্রকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তির এই সময়েও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতার যুদ্ধে জাতিকে মেধাশূন্য করে দিতেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। যে উদ্দেশে বুদ্ধিজীবীরা আত্মদান করেছেন, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা এ বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ করতে চলেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলাম, আমাদের অগণিত সৈনিক প্রাণ দিয়েছেন, বুদ্ধিজীবীরা প্রাণ দিয়েছেন, দুঃখজনক হলেও সত্য গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র আমরা এখনও গড়ে তুলতে পারিনি।’

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘যে স্বপ্ন নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে, যে উদ্দেশে বীর শহীদরা জীবন দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সেই স্বপ্ন এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের রাজনীতি চলবে। আমরা বৈষম্য ও শোষণমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে যাব। আমরা তেমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেমন বাংলাদেশ গড়তে বীর শহীদরা জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘স্বাধীন ছিল মাত্র ২৪ দিন। ১৯৭১ সালে ৯ জানুয়ারির পর পাকিস্তানি শাসন ব্যবস্থা আবার জারি হয়ে গেছে। ৫০ বছরের অর্জন হলো, গণতন্ত্রের সম্মেলনে আমরা যেতে পারিনি। এটাই হলো অর্জন। সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন। এরপর গত ৫০ বছরে অর্জন কী, আর ভোট চুরি কী; কোনোটিরই মূল্যায়ন হয়নি।’

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধেও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস স্বাধীনতার বিপক্ষশক্তি রাজাকার, আল বদর, আল শামসসহ যুদ্ধাপরাধে জড়িত সকলের পূর্ণাঙ্গ বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি, বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকলেই স্লোগান দিতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

 

এসএম/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

৩ ম্যাচ পর মাঠে ফিরেই মেসির দুর্দান্ত গোল, কোয়ার্টারে ইন্টার মিয়ামি (ভিডিও)

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

চোটের কারণে টানা তিন ম্যাচ মাঠের বাইরে থাকার পর আবারও মাঠে ফিরে দুর্দান্ত এক গোল করেছেন লিওনেল মেসি। ক্যাভালিয়েরের বিপক্ষে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে মেসি ছিলেন বেঞ্চে, তবে বিরতির পর ৫৩ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন এবং নিজের প্রথম গোল করেন।

মেসির জন্য এটি ছিল জ্যামাইকায় প্রথম ম্যাচ এবং তার উপস্থিতি নিয়ে দেশটিতে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। মেসির কারণে ম্যাচটি ক্যাভালিয়েরের ৩ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ন্যাশনাল স্টেডিয়াম ইনডিপেনডেন্টস পার্কে, যেখানে ধারণক্ষমতা ছিল প্রায় ৩৫ হাজার। এই মাঠে এসে মেসিকে একনজর দেখতে আসা দর্শকরা হতাশ হননি, কারণ তারা মেসিকে গোল করতে দেখার আনন্দ পেয়েছেন।

মেসি ম্যাচের যোগ করা সময়ে দারুণ একটি গোল করেন। সতীর্থ সান্তিয়াগো মোরালেসের পাস ধরে বক্সে ঢুকে মেসি দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে গোল করেন। এর ফলে, ক্যাভালিয়েরের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে ইন্টার মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলের জয় নিয়ে তারা কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের কোয়ার্টারে পৌঁছেছে।

মেসির অনুপস্থিতিতে প্রথমার্ধে সুয়ারেজের পেনাল্টি গোলে ৩৭ মিনিটে ইন্টার মায়ামি ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। ম্যাচের বাকি সময়টা ১-০ ব্যবধানেই শেষ হওয়ার মতো মনে হচ্ছিল, তবে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে মেসি গোল করে সবাইকে উল্লসিত করেন।

এদিন মেসির ক্যারিয়ার গোল সংখ্যা ৮৫৩-এ পৌঁছেছে এবং মায়ামির হয়ে তার গোলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭।

 

Header Ad
Header Ad

মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, সেই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তাকরণ ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিটি বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকেও প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে তারেক রহমান বলেছেন, নির্মম পাশবিকতায় সেই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে। সেই শিশুর ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একইসঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে একাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের। আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আধুনিক এ যুগে মানবজাতি এরূপ অমানবিক, পৈশাচিক এবং বর্বরোচিত কাজে লিপ্ত হতে পারে, তা কল্পনাতীত। ধর্ষণ শুধু অপরাধই নয়, মানবতার বিরুদ্ধে চরম আঘাত এবং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র। আমাদের সমাজে যে নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে চলছে, তা মানবতা ও নৈতিকতার মৌলিক ভিত্তিকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমরা দেখছি পবিত্র মাহে রমজান মাসেও ধর্ষণের ঘটনা থামছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুদের ওপর চলমান নিপীড়ন, হেনস্তাকরণ ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ রোধে সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নারী হেনস্তা, হয়রানি, ধর্ষণ বা ধর্ষণের হুমকির মতো ঘটনা মানুষ আর প্রত্যাশা করে না। তারপরেও এ ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে। নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যেকোনো ধরনের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। এ ছাড়া একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে হবে। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে হবে আইনিভাবে।

বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, এ ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘটনা শুধু বর্তমান সমাজকে কলুষিত করছে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও এক ভয়ংকর দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।

Header Ad
Header Ad

ইসলামী শাসনে চলবে সিরিয়া, অস্থায়ী সংবিধানে সই করলেন প্রেসিডেন্ট

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) একটি অস্থায়ী সংবিধানের খসড়া প্রস্তাবে সই করেছেন, যার মাধ্যমে দেশটি আগামী পাঁচ বছর ইসলামী শাসনের অধীনে চলবে। আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) দ্রুত বিদ্রোহ শুরু করার পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতারা নতুন শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছেন।

শারার এবং বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী নেতাদের মধ্যে এক বৈঠকের পর অস্থায়ী সংবিধান ঘোষণা করা হয়। একে কেন্দ্র করে পুরনো সংবিধান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

অস্থায়ী সংবিধানের খসড়ার প্রক্রিয়া নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সদস্য আব্দুলহামিদ আল-আওয়াক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, পূর্ববর্তী সংবিধানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা রক্ষা করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য মুসলিম হওয়ার শর্ত এবং আইনশাস্ত্রের প্রধান উৎস হিসেবে ইসলামী আইন নির্ধারণ।

এই অস্থায়ী সংবিধানটির প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের রাজনৈতিক উত্তরণে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা। ডিসেম্বরে শারা জানিয়েছিলেন যে, সিরিয়ার সংবিধান পুনর্লিখনে তিন বছর এবং নির্বাচনের আয়োজন করতে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

এদিকে, গত মাসে সিরিয়ায় একটি জাতীয় সংলাপ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই সম্মেলনটি তাড়াহুড়ো করে আয়োজিত হয়েছিল এবং সিরিয়ার বিভিন্ন জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বা নাগরিক সমাজের পর্যাপ্ত অংশগ্রহণ ছিল না।

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫০ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের পর নতুন শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা এখনও নতুন সরকারের প্রতি সন্দিহান। তবে, তুরস্কের মারদিন আর্তুকলু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ আল-আওয়াক জানান, অস্থায়ী সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে, যা দেশের নড়বড়েও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করবে।

সিরিয়ার চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, শারা সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন যোদ্ধাদের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করেছেন, যার মধ্যে কুর্দি যোদ্ধাদের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার বিষয়ও রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৩ ম্যাচ পর মাঠে ফিরেই মেসির দুর্দান্ত গোল, কোয়ার্টারে ইন্টার মিয়ামি (ভিডিও)
মাগুরার সেই শিশুর মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না: তারেক রহমান
ইসলামী শাসনে চলবে সিরিয়া, অস্থায়ী সংবিধানে সই করলেন প্রেসিডেন্ট
বিরামপুরে ভিটামিন 'এ' প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত
ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু, আজ পাওয়া যাচ্ছে ২৪ মার্চের টিকিট
ড. ইউনূস ও গুতেরেসের কক্সবাজার সফর আজ, ইফতার করবেন লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে
ঢাকা বশ্বিবিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আরেফিন সিদ্দিক মারা গেছেন
আমি জানি না, ওরা কেন মাঠ থেকে অবসর নিতে চায় না : খালেদ মাহমুদ সুজন
উপদেষ্টা মাহফুজ শাহরিয়ার কবিরদের ভাষাতেই কথা বলেছেন : জামায়াত
নওগাঁ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা
শিশু আছিয়ার দাফন সম্পন্ন, অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দিলো বিক্ষুব্ধ জনতা
বেইজিংয়ে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ড. ইউনূস
‘২০২৬ সালেই বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে’
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শোভনের বাবা গ্রেপ্তার
শুক্রবার থেকে বন্ধ হচ্ছে দেশের সব পর্ন ওয়েবসাইট
ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে আসা নিয়ে যা বলল হামাস
গাম্বিয়ার সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীরতর করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্ত্রীসহ সাবেক বিজিবি প্রধান সাফিনুল ইসলামের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মাগুরার শিশু ধর্ষণ ও হত্যার বিচার ৭ দিনের মধ্যে শুরু হবে: আইন উপদেষ্টা
আছিয়ার মরদেহ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় নেওয়া হবে