শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে উজ্জীবিত বাঙালি

আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০২১। ঠিক ৫০ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার দোসর আল-বদর, আল-শামসরা। সেদিন বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

প্রতিবছর এই দিনটি আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেনতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবি সংগঠণ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শহিদ পরিবারের সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্র প্রধানের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালেহ উদ্দিন ইসলাম তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী দেশের মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

৫০ বছর আগে এই দিনে দেশের ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর চোখ বেঁধে নিজ নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী ও লেখকসহ মাটির দুই শতাধিক কৃতী সন্তানকে। প্রথমে তাদের চোখ বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে টর্চার সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরবর্তীকালে, নতুন উদীয়মান বাংলাদেশকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করার জন্য তাদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে, বিশেষ করে রায়েরবাজার ও মিরপুরে হত্যা করা হয়।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর যারা খুনিদের রোষানলে পড়েন তাদের মধ্যে ছিলেন ডা. আলিম চৌধুরী এবং ডা. ফজলে রাব্বি, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজুদ্দিন হোসেন, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান, সেলিনা পারভীন এবং সাহিত্যিক মুনীর চৌধুরীসহ আরও অনেকে। এরপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।

 

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। একে একে সকল রাজনৈতিক দল পেশাজীবী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান ও কেন্দ্রিয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম (কামাল হোসেন অংশ), গণফোরাম (মন্টু-সুব্রত), গণসংহতি আন্দোলন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক ডা. নূরুল ইসলাম হাসিবের নেতৃত্বে ডিআরইউ সদস্যরা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। বঙ্গবন্ধু কৃষিজীবী পরিষদ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ছাড়াও রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধেও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অনেকে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করার পাশাপাশি তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলেই এক সুরে কথা বলেন। অনেকে বলেন স্বাধীনতার স্বপ্ন এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানোর পর দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন,
‘মুক্তিযুদ্ধে আমরা যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক সেই সময় বাঙালির মেধা ও বিবেক হিসেবে খ্যাত বুদ্ধিজীবীদের জাতিকে মেধাশূন্য করে দিতে হত্যা করেছিল। সেদিন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পরাজিত হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে, বাঙালির কাছে। তাদের আন্তর্জাতিক যে প্রভু রয়েছে তারাও সেদিন পরাজিত হয়েছিল। আজকেও যে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেই ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে এই বাঙালি জাতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে। এই হল বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রত্যয়।’

দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসররা। সব বুদ্ধিজীবীদের চেতনাকে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলক হক বলেন, ‘পালিয়ে থাকা বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের ফিরিয়ে আনতে সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আশ্রয়দাতা দেশগুলো তাদের দেশের রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতার কথা বলে তাদের হস্তান্তর করছে না।’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীরা আন্তর্জাতিক চক্রকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তির এই সময়েও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতার যুদ্ধে জাতিকে মেধাশূন্য করে দিতেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। যে উদ্দেশে বুদ্ধিজীবীরা আত্মদান করেছেন, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা এ বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণ করতে চলেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলাম, আমাদের অগণিত সৈনিক প্রাণ দিয়েছেন, বুদ্ধিজীবীরা প্রাণ দিয়েছেন, দুঃখজনক হলেও সত্য গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র আমরা এখনও গড়ে তুলতে পারিনি।’

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘যে স্বপ্ন নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে, যে উদ্দেশে বীর শহীদরা জীবন দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সেই স্বপ্ন এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের রাজনীতি চলবে। আমরা বৈষম্য ও শোষণমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে যাব। আমরা তেমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেমন বাংলাদেশ গড়তে বীর শহীদরা জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘স্বাধীন ছিল মাত্র ২৪ দিন। ১৯৭১ সালে ৯ জানুয়ারির পর পাকিস্তানি শাসন ব্যবস্থা আবার জারি হয়ে গেছে। ৫০ বছরের অর্জন হলো, গণতন্ত্রের সম্মেলনে আমরা যেতে পারিনি। এটাই হলো অর্জন। সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন। এরপর গত ৫০ বছরে অর্জন কী, আর ভোট চুরি কী; কোনোটিরই মূল্যায়ন হয়নি।’

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধেও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস স্বাধীনতার বিপক্ষশক্তি রাজাকার, আল বদর, আল শামসসহ যুদ্ধাপরাধে জড়িত সকলের পূর্ণাঙ্গ বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তি, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি, বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং তারা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকলেই স্লোগান দিতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

 

এসএম/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন ভূঞাপুর ছাড়াও আশপাশের গোপালপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার অসংখ্য মানুষ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটি বর্তমানে নিজেই এক অসুস্থ প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে।

বছরের পর বছর ধরে চলে আসা নানা অব্যবস্থাপনা, জনবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ—সব মিলিয়ে এই সরকারি হাসপাতালটি এখন রোগীদের ভোগান্তির আরেক নাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভিতর ও বাইরের পরিবেশ একেবারেই নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা রোগী ও তাদের স্বজনদের দীর্ঘ সময় ধরে সইতে হচ্ছে। বিশেষ করে টয়লেটের অবস্থা ভয়াবহ; অধিকাংশ টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য এবং পরিচ্ছন্নতার কোনো ব্যবস্থাই নেই। পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড উভয়ের রোগীরা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতাল কার্যত অন্ধকারে ডুবে যায়। হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও তা চালু করা হয় না এবং সেটিও বহু পুরনো। হাতে গোনা কয়েকটি চার্জিং বাল্ব থাকলেও সেগুলোর অনেকগুলোর আলো টিকেই না, কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে যায়। শিশু ওয়ার্ডের (ডায়রিয়া) মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চার্জিং বাল্ব পর্যন্ত নেই। ফলে রাতের বেলায় এক ভয়ংকর ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আলো না থাকায় নার্সদের মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে সেবা দিতে দেখা গেছে।

চরম গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা। শিশু ওয়ার্ডে থাকা আটটি ফ্যানের মধ্যে তিনটি সম্পূর্ণ নষ্ট, আর যেগুলো সচল রয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় সেগুলোও চলে না। ফলে শিশু রোগীরা ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে, তাদের স্বজনরা হাতপাখা বা চার্জার ফ্যান নিয়ে চেষ্টা করছেন কিছুটা স্বস্তি দিতে।

হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখা যায়, মেঝেতে ময়লার দাগ, দেয়ালে থুতু, কফ ও পানের পিকের ছিটা। শয্যা ও ওষুধ রাখার ট্রেগুলোতেও দেখা গেছে মরিচা ও জমে থাকা ময়লা। এসব স্থানে মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে অবলীলায়, যা পুরো হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে আরও প্রকট করে তুলেছে।

এমন পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী, যিনি হাসপাতালের বারান্দায় ফ্যানহীন পরিবেশে ভর্তি রয়েছেন। অভিযোগ করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ার পরও কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি। টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগিতা নিয়েও তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিন মাসের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোজিনা বেগম বলেন, টয়লেটের অবস্থার কারণে তিনি পানি ও খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন, যেন টয়লেট ব্যবহার না করতে হয়। টয়লেটে ঢোকা তো দূরের কথা, পাশে দাঁড়ানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে।

গোপালপুর উপজেলার বড়শিলা গ্রামের রোগীর স্বজন সাজেদা বেগম বলেন, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীর স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কোনো অভিযোগ করার সুযোগ নেই, আর কেউ কিছু বললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

স্থানীয়দের দাবি, ২০২২ সালে ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) হিসেবে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের এই বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নার্স জানান, ডা. সোবহান কর্তৃত্ববাদী মনোভাব পোষণ করেন। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগকারীরা বদলি বা হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

তবে আরএমও ডা. খাদেমুল ইসলাম বলেন, “সমস্যা যে নেই, সেটা বলছি না। তবুও আমরা সীমিত জনবল ও সামর্থ্যে কাজ করে যাচ্ছি। শতভাগ কাজ সম্ভব হয় না।”

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান বলেন, “জেনারেটর থাকলেও সেটি চালাতে সরকারি বরাদ্দ নেই। মাঝেমধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালানো হয়। ক্লিনার মাত্র একজন, মাঝে মাঝে বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে পরিষ্কার করাতে হয়। আর ফ্যান বা লাইট যেকোনো সময় নষ্ট হতে পারে, যখন জানা যায়, তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” বীর মুক্তিযোদ্ধার বারান্দায় চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কেভিনের ব্যবস্থা রয়েছে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সার্বিকভাবে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা যে ভয়াবহ নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তা এই চিত্রগুলো স্পষ্ট করে দেয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ নজরদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে, এই হাসপাতাল রোগীদের সুস্থতার জায়গা হয়ে না থেকে এক ভয়াবহ দুর্ভোগের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।

 

Header Ad
Header Ad

প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিত মুখার্জিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর সমস্যা নিয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। পরে চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য আইসিইউতে নিয়ে যান।

পরিচালকের ঘনিষ্ঠ সুত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সৃজিতের। সেই সঙ্গে বুকে হালকা ব্যথাও অনুভব করছিলেন পরিচালক। এরপর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।

সেখানে রাতেই বেশ কিছু টেস্ট করানো হয়। শনিবার টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার কথা রয়েছে। আর তা দেখে চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন কতদিন পরিচালককে হাসপাতালে থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: অন্তরঙ্গ দৃশ্যের আগে প্রেমিক ও পরিবারের অনুমতি নিয়েছিলেন কৌশানি। তবে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সৃজিতের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

সদ্যই লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের তালিকায় স্থান দখল করেছে সৃজিতের ‘অতি উত্তম’। ইনস্টাগ্রামে গর্বের কথা শেয়ার করেছেন তিনি। তাছাড়া এই নির্মাতার নতুন সিনেমা ‘কিলবিল সোসাইটি’ মুক্তি পেয়েছে গত ১১ এপ্রিল।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আটক
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর