দ্রব্যমূল্য আমরা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি: প্রধানমন্ত্রী
করোনাভাইরাস এবং সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সবকিছুর মূল্য বেড়ে গেছে। তার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। তবে তা নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি যার ফলে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি। করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর আজই প্রথম সরাসরি প্রশ্নোত্তর দিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে বেলা সাড়ে ১১ টার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আশা করি পবিত্র রমজানেও দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। সংসদে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের বর্তমান দর তুলে ধরে তার একটি পরিসখ্যানও দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব বাজারের মূল্য তালিকা তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, গমের দাম ৬০ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়েছে, অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের মূল্য ২৬ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে, পাম তেলের দাম বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, চিনির দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। এছাড়া বিশ্ব বাজারে প্রায় সব কিছুর দাম বেড়েছে। তার ফলে দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীসহসব ধরনের পণ্যের দাম কিছুটা বেড়ে যায়। তবে দ্রব্য মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকসেল, ওএমএসের মাধ্যমে ও কার্ডের মাধ্যমে ১ কোটি পরিবারকে স্বল্প মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনীয় থাকবে এমনটাই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারের এসব কার্যক্রম নেওয়ার ফলে বাজারে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং তা আমরা সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিয়েছি। আশাকরি আসন্ন পবিত্র রমজান মাসেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নিত্যপ্রযোজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও সে অনুযায়ী প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত ‘দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল’ কর্তৃক প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, টিসিবি ও কৃষিবিপণন অধিদপ্তর থেকে নিত্যপ্রয়োাজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ও সরবরাহ অবস্থা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এলসির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এসময় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব ব্যাংক হতে গত জানুয়ারী মাসে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইকোনোমিক প্রসপেক্সস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈশিক মন্দা কাটিয়ে বিশ্বে যে কটি দেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কোভিট-১৯ মহামারিতে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্তিমিত বা ঋণাত্বক হলেও অঅমাদের সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবার ফলে প্রবৃদ্ধি সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। তারা কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে মহামারিতে অর্থনৈতিক ক্ষতি যতটা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়ে অনেক কম ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসএম/কেএফ/