আইনের শাসন নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখে না বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
যারা রাজনীতির জন্য মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, ঘুমন্ত মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করে তারা আইনের শাসনের কথা বলার অধিকার রাখে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে কে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ বন্ধ করেছিল? জেল হত্যার বিচারের কাজ কে বন্ধ করেছিল? আইনের শাসন, এই দুশাসন জারি করেছিলেন আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
সোমবার (২৮ মার্চ) বিকালে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৭তম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন সরকারের মন্ত্রী। এর আগে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা দেশে আইনের শাসন নেই বলে মন্তব্য করায় তিনি তার জবাব দেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, হাউজি জুয়া, মধ্যপান বন্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আপনার নেতা জিয়াউর রহমান মদের লাইসেন্স দিয়েছিলেন, হাউজির লাইসেন্স দিয়েছিলেন, প্রিন্সের জরিনা লাকি খানের নাচ এই বাংলাদেশে কে চালু করেছিল? এই বাংলাদেশে জিয়াউর রহমান চালু করেছিল। সুতরাং এই নিয়ে কথা বলার অধিকার আপনাদের নেই। হিজবুল বাহারে মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন, সন্ত্রাসী বানিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। দুর্নীতির কথা বলেন? প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনসুরণ করছেন বিধায় দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশ ক্রমগত উন্নতি করছে অর্থাৎ দুর্নীতি কমছে। আর আপনারা পর পর ৫ বার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন। সুতরাং আপনাদের মুখে দুর্নীতির কথা মানায় না।
বিএনপির রুমিনের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, আপনাদের দলের প্রধানমন্ত্রী, আপনার নেত্রী কালো টাকা সাদা করেছেন, অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেছেন। সুতরাং দুনীতির কথা আপনাদের মানায় না। আর আইনের শাসনের কথা বলেন, জিয়াউর রহমান যে শত শত মানুষকে, সেনাবাহিনীর অফিসারদের, জোয়ানকে বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়েছেন, সেটার জবাব দেবে কে? ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা কার নেতৃত্বে হয়েছে? তারেক রহমানের নেতৃত্বে। খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসরে ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা হয়েছে, সেই গ্রেনেড হামলার পর এই সংসদে একটা নিন্দা প্রস্তাব আনার কথা বলা হয়েছিল সেদিন হাস্যরস করা হয়েছিল। উপহাস করা হয়েছিল আমার নেত্রী নাকি ভেনিটি ব্যাগে নিয়ে গেছেন, আমরা নাকি সেদিন আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আপনারা (বিএনপি নেতারা) আইনের শাসনের কথা বলেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করে কে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ বন্ধ করেছিল? জেল হত্যার বিচারের কাজ কে বন্ধ করেছিল? বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার কে বন্ধ করেছিল? আমাদের নেত্রী সংসদ নেতা তার বিচার চাওয়ার অধিকার কে কেড়ে নিয়েছিলেন এবং ৩ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন কে? আইনের শাসনের কথা আপনারা বলতে পারেন না।
এরপর জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে বলেন, করোনার কারণে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমস্ত পৃথিবীতে খাদ্যপণ্যে, ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপে গত কয়েক দশকের মধ্যে ভোগ্যপণ্যের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। রুটির দাম ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশেও কিছু খাদ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১ কোটি পরিবারকে বিশেষ কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেই কার্ডের ভিত্তিতে ৫ কোটি মানুষের কাছে স্বল্প মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এতে খাদ্যে পণ্যের দাম অনেক কমেছে। আপনি আসলে বাজারে যান না। আমি বাজারে যাই। বাজারে অনেক পণ্যের দাম কমে গেছে। সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমেছে এবং পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজি। যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়েছিল। আপনি বাজারে না গিয়ে অসত্য তথ্য দিয়েছেন।
এসএম/আরএ/