‘আমেরিকা অপরাধীদের রক্ষা করে আর আমাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়’
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অপরাধীদের রক্ষা করে যাদের দেশে স্থান দেয়, আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়, এটা যাদের চরিত্র তাদের বিষয়ে আর কী বলব।’
সোমবার (২৮ মার্চ) ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র্যাব, পুলিশ বা যে কেউ তারা নিজেরা যদি কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে আমরা কিন্তু তার শাস্তির ব্যবস্থা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে যারা আমাদের বিনা কারণে, বিনা দোষে র্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে যারা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে তারা কিন্তু তাদের কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো রকম শাস্তি মূলক ব্যবস্থা করে না।’
আমেরিকায় সেখানে একটা বাচ্চা ছেলে শুধু পকেটে হাত দিয়েছিল তাকে গুলি করে মারল। আবার রাস্তায় ফেলে একজনকে পা দিয়ে গলা চেপে মেরে ফেলল। সেখানে যদি এ ধরনের অপরাধ কেউ করে অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে কেউ যদি অপরাধ করে, অপরাধ করলেও তাদের কিন্তু সেখানে কোনো শাস্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু বাংলাদেশেই একমাত্র দেশ পৃথিবীতে যেখানে কেউ অপরাধ করলে আমরা তার শাস্তির বিধান করি। তার পরেও দুর্ভাগ্যের বিষয় যারা এ ধরনের অভিযান করে সাফল্য অর্জন করেছে এবং হলি আর্টিজানের ঘটনায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটা উদ্ধার করি। জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক বিভিন্ন ক্ষেত্রে র্যাবের সাফল্য। আমি জানি না আমাদের এ সাফল্যগুলোতে এরা কোনো দুঃখ পেয়েছে কি-না? তা আমি বলতে পারি না। কিন্তু বাংলাদেশে যে এক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে এটা হলো সত্য কথা। সেক্ষেত্রে এ ধরনের একটা বিধিনিষেধ জারি এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব থেকে দুঃখজনক হলো আমাদের দেশের কিছু মানুষ তারাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালায়। আর যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে বিদেশে বসে তারা কিন্তু অপরাধী। কোনো না কোনো দোষে চাকরি হারিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে। সেখানে আমাদের যুদ্ধাপরাধীরাও যেমন স্থান পেয়েছে, জাতির পিতার খুনি, আত্মস্বীকৃত খুনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সেও কিন্তু আমেরিকাতে বসবাস করছে। তাকে তারা ওখানকার সিটিজেন করে নিয়েছে। আমরা বারবার তাদের অনুরোধ করেছি। প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিচ্ছি। একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছে আমরা তার কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি। আমেরিকার জাস্টিস ডিপার্টমেন্টও আমরা আহ্বান করেছি যে এরা অপরাধী, এরা শিশু হত্যাকারী, নারী হত্যাকারী, খুনি। ১৫ আগস্ট তারা খুন করেছে। তাদের আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। তারা অপরাধীদের রক্ষা করে যাদের দেশে স্থান দেয় আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশের নিষেধাজ্ঞা দেয়।
তিনি বলেন, র্যাবকে আমরা আরও শক্তিশালী করতে ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে ত্রিমাত্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। যার ফলে যেকোনো ঘটনা ঘটলে খুব দ্রুত যেন তারা অ্যাকশন নিতে পারে, কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি।
এসএম/এসএন