আমাদের বর্তমানকে আগামী প্রজন্মের জন্য উৎসর্গ করলাম: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সংবিধানে দিয়েছিলেন। সেই সংবিধানে নির্দেশনাগুলো ছিল সেটা অক্ষরে অক্ষরে মেনে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তা এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলা করতে পারবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে আর কেউ কোন খেলা খেলতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ কখনও ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।
সুবর্ণজয়ন্তীর পথ ধরেই আমরা এগিয়ে যাব। শতবর্ষ উদযাপন করবে আগামী দিনের প্রজন্ম। তারা করবে ২০৭১ সালে। কাজেই তাদের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং আমাদের বর্তমানকে আগামী প্রজন্মের জন্য উৎসর্গ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্ত্রীর সমাপনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৬ মার্চ) বিকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনি অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলার জয়োৎসব’ এর চারদিন ব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মূল মঞ্চে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ ছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য সচিব ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। চারদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ যে আলোর পথের যাত্রা শুরু করেছে। আমি যে ঘোষণা দিয়েছিলাম আজকে ঠিকই আলোর পথে যাত্রা শুরু করে সমগ্র দেশের মানুষের প্রতি ঘরকে আলোকিত করার সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।’
বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলা করতে পারবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে আর কেউ কোনো খেলা খেলতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কখনো কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না, যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তা এগিয়ে যাবে। আজকে যে প্রজন্ম, তাদের কাছে এটাই আহ্বান আমরা যে পরিকল্পনা দিয়ে যাচ্ছি। যেমন ২০০৮-২০২১ পরিকল্পনা যে পরিকল্পনা দেই সেটা বাস্তবায়ন করেছি। আমরা স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করেছি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে যাচ্ছি, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি। বাংলাদেশকে যেন আর কখনও কেউ অবহেলা করতে না পারে। বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। শিক্ষা, দীক্ষায়, জ্ঞানে, প্রযুক্তি জ্ঞানে, বিজ্ঞান সব দিক থেকে যেন আমরা এগিয়ে থাকতে পারি। বাংলাদেশের মানুষের যে মৌলিক চাহিদা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান তার ব্যবস্থা আমরা করেছি। যেটা জাতির পিতা স্বাধীনতার পর মাত্র ৯ মাসের মধ্যে আমাদের যে সংবিধান দিয়েছিলেন। সেই সংবিধানে এসব মৌলিক চাহিদার কথা উল্লেখ ছিল।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যেন আর কেউ অবহেলা করতে না পারে। মাথা উঁচু করে চলতে পারে। উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে হবে। ২০৪১ সালে কেমন বাংলাদেশ হবে তার প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি। ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়ে যাচ্ছি। ব-দ্বীপটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। বাংলাদেশ সুবর্ণজয়ন্তীর পথ ধরে এগিয়ে যাব। এগিয়ে যাওয়ার গতি ধরে রাখতে হবে।
আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা ২০৪১ সালের বাংলাদেশ, কেমন বাংলাদেশ হবে সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা পুন:প্রণয়ন করে দিয়ে গেছি। এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৫ম বার্ষিকী পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ১০০ বছর অর্থাৎ ২১০০ সালে ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়ে গেছি, তারও কিছু প্ল্যান বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এই ব-দ্বীপটি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে কেমন বাংলাদেশ দেবে, আর এদেশের মানুষ কীভাবে বাঁচবে তারা যে উন্নত জীবন পাবে সেই লক্ষ্য নিয়েই এটা করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্রের হার কমাতে সক্ষম হয়েছি। একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতার যে লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন, আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এই দেশের কোনো মানুষই আর ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। সেটা আমরা নিশ্চত করব।
তার পথে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। এই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। সুবর্ণজয়ন্তীর পথ ধরেই আমরা এগিয়ে যাব। শতবর্ষ উদযাপন করবে আগামী দিনের প্রজন্ম। তারা করবে ২০৭১ সালে। কাজেই তাদের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং আমাদের বর্তমানকে আগামী প্রজন্মের জন্য উৎসর্গ করে আজকের স্বাধীনতার জয় বাংলার জয়োৎসবের উদ্বোধন করলাম।
এরপর চলে দেশের বরণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোজ সজ্জা। দলীয় ও একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের মাধ্যমে জয় বাংলার জয়োৎসব অনুষ্ঠানকে আলোড়িত করে।
এসএম/এমএমএ/