বাঙালি গণহত্যার স্বীকৃতি না দিয়ে জাতিসংঘ প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে
সেক্টর কমান্ডারস্ ফোরাম আয়োজিত সেমিনারে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়কে জাতীয় অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আলোচকরা। তারা বলেছেন, জাতিসংঘ ১৯৭১ সালের আগের এমন কি পরেরও বহু গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার ফলে জাতিসংঘ তার প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল বিষয় ছিল ‘বাঙালি গণহত্যার স্বীকৃতি-জাতিসংঘের ব্যর্থতা’।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সহ-সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ। আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাষ্টি ডা. সারওয়ার আলী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, সাংবাদিক হারুন হাবীব, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল(অব.) মোহাম্মদ আলী সিকদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লায়লা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী ও মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এডিশনাল আইজিপি আব্দুল মামুদ এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী লায়লা হাসান।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, জাতিসংঘ থেকে বাঙালি গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় করতে হলে সরকারকে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, এটি একটি জাতীয় নৈতিকতা, কাজেই আর বিলম্ব না করে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানাতে হবে।
হারুন হাবীব বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ তৈরি করে জাতীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সরকারকে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করতে হবে। এ ব্যাপারে দেশের জনমত তৈরির বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল সামাজিক সংগঠনকে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ ১৯১৫ সালের আমের্নীয় গণহত্যা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও ইহুদি গণহত্যাসহ বহুবিধ গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি। একে তিনি জাতিসংঘের চরম ব্যর্থতা ও দৈন্যতার বহি:প্রকাশ বলে মনে করেন।
নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বলেন, জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ে সরকারকে জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্যথায় এই স্বীকৃতি মিলবেনা।
মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর যে সরকারগুলি ছিল তারা গণহত্যার স্বীকৃতি চায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকারকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
মূল প্রবন্ধে ড. রফিকুল ইসলাম একদিন না একদিন এই গণহত্যার স্বীকৃতি আসবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।
সেমিনার সঞ্চলনা করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রাষ্ট্রদূত মো.কামালউদ্দিন।
এপি/