ভারতে পাচার ২৩ নারী-শিশুকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সেফ হোমে আটকে থাকা তেইশ (২৩) জন বাংলাদেশি নারী ও শিশুকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের অধীনে প্রতিষ্ঠিত নারী ও শিশু পাচার রোধ বিষয়ক বিশেষ টাস্কফোর্সের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় ভারতে পাচারের শিকার ২৩ জন বাংলাদেশী নারী ও শিশুকে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বহু বাংলাদেশি নারী ও শিশু বিভিন্ন সময়ে পাচার হয়ে কিংবা অবৈধভাবে বা ভুলক্রমে ভারতে এসে আটক হয়ে বিভিন্ন সেইফ হোমে অবস্থান করছেন।
আটককৃত এ সব নারী ও শিশুদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিরেক্টরেট অব চাইল্ড রাইটস এন্ড ট্রাফিকিং বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতাকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় অবহিত করে।
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতা এসব সেফ হোমসমূহ পরিদর্শন করে আটককৃত বাংলাদেশি নারী ও শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে অবহিত করে। পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পাদনের পর বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন, কলকাতা ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করে যথাসম্ভব দ্রুত তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন, কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের নারী ও শিশু পাচার রোধকল্পে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে বছরের পর বছর ভারতের বিচারিক আদালতের মামলার কারণে বিভিন্ন সেফ হোমে আটকে থাকা এই সব নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষে ইতোপূর্বে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি ৩৮ জন, ২০ সেপ্টেম্বর ৩৭ জন, ৭ অক্টোবর ২০ জন এবং ৭ জানুয়ারী ২০২২ তারিখ ২১ জন নারী ও শিশুকে ফেরত পাঠানোর পর বড় পরিসরে এই ধরনের এটি পঞ্চম প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া (মোট ১৩৯ জন) এবং আটককৃত অবশিষ্ট বাংলাদেশী নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতার প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান মিজ শামীমা ইয়াসমীন স্মৃতির প্রতিনিধিত্বে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কলকাতার একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বেনাপোলে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিকট ২৩ জন নারী ও শিশুকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশে প্রত্যাবাসনকৃত এই ২৩ জন নারী ও শিশুর মধ্যে ৬ জন পূর্ণবয়স্ক নারীসহ আরও ৮ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে এবং যারা ভারতের বিভিন্ন সেফ হোমে বিভিন্ন মেয়াদে আটক ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের বিভিন্ন সংস্থা, বাংলাদেশের বিজিবি এবং বিএসএফসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সময় বেনাপোল সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন।
আরইউ/এমএমএ/