আমন্ত্রণ পেলেন ৪০ জন
এবার বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নেবে ইসি
নিজেদের শানিত করতে এবার বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সংলাপের মাধ্যমে যেসকল পরামর্শ দেওয়া হবে সেগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে ইসি। ধারাবাহিকভাবে এই সংলাপ চলতে থাকবে। এরপর গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গেও বৈঠক করবে ইসি। তারপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করবে ইসি। রবিবার (২২ মার্চ) বেলা ১১ টায় ইসির সভাকক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এর নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
অতীতে নির্বাচন পরিচালনায় অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের পরামর্শ নিতে চায় ইসি। তাই এবারের সংলাপে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে বিলুপ্ত এই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার আটজন সদস্যের পরামর্শ নেবে সংস্থাটি।
বিগত তিনটি কমিশনের ধারাবাহিকতায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। তবে এবারই প্রথম কোনো কমিশন এতজন তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ওই দিনের বৈঠকে ৪০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, ডক্টর হোসেন জিল্লুর রহমান, এম হাফিজ উদ্দিন খান, আবদুল মুহিত চৌধুরী, ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম ও বেগম রোকেয়া এ রহমান।
নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান সংশোধন করে তুলে দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন থেকে। এ নিয়ে বিরোধী দলগুলো বারবার আগের ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার দাবি তুলছে।
তবে ইসি বলছে, যেহেতু সাংবিধানিক কাঠামোতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই, তাই যারা আগে এমন সরকারের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের পরামর্শ নিতে চায়।
ইসির তালিকা থেকে জানা গেছে, বিশিষ্টজন হিসেবে ওই দিনের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য সাবেক গর্ভনর, সাবেক সচিব, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিকতার শিক্ষকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্বনামধন্য জনহিতৈষী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের বৈঠকে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও।
এছাড়াও রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গোলাম হোসেন, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল, সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, গভর্নেন্স অ্যান্ড্রয়েড সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ড. জহিরুল আলম, স্ট্রািটেজি অ্যানালিস্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল হাফিজ (অব.), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মহসিন।
আবার বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ওয়ালিউর রহমান, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-এর ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সেন্টার ফর স্টাডিজ চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, নিজেরা করি সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর খুশি কবির, ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ, লিডারশিপ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. এম এ সাঈদ, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাবির অধ্যাপক রওনক জাহান, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও কাবেরী গায়েনকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি।
বর্তমান কমিশন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ পাওয়ার পর ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ গ্রহণ করে। ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা দায়িত্ব বুঝে নিয়েই সংলাপের উদ্যোগ নেয়। গত ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বসেছিলেন তারা।
এসএম/