আর অবৈধ পথে বিদেশে যাবেন না তারা
আর অবৈধ পথে বিদেশে যবেন না বলে জানিয়েছেন, লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসা চার যুবক ও এক নারী। সোমবার (২১ মার্চ) উত্তর আশকোনার হাজী ক্যাম্পে ঢাকাপ্রকাশের সঙ্গে কথোপকথনে এসব কথা বলেন তারা।
হবিগঞ্জ জেলার মো. জুনায়েদের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘অবৈধ পথে বিদেশে যাওয়া অনেক কষ্ট। জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। আর অবৈধ পথে বিদেশে যাব না। প্রথমে ৩ লাখ টাকা দিয়ে সমুদ্রপথ পর্যন্ত গিয়েছি। এরপর দালাল আমাদের বিক্রি করে দেয়, পরে ৬ লাখ টাকা দিয়েছি। কোনোভাবে জান নিয়ে ফিরে এসেছি।’
কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবের কাদির মিয়া বলেন, ‘দালালের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লিবিয়াতে গিয়েছি। সেখানে গিয়ে অনেক কষ্ট পেয়েছি। অবৈধ পথে আর কখনো দেশের বাইরে যাব না। প্রয়োজনে দেশে অনেক কষ্ট করব।’
গোপালগঞ্জ জেলার হোসেন মিঞা বলেন, ‘ভিটেমাটি বিক্রি করে দেশের বাইরে গিয়েছিলাম নিঃস্ব হয়ে ফিরেছি। ওই দেশে গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়তে হয়েছে সেখানে আমাদের অনেক মারধর করেছে। টাকা গিয়েছে দুঃখ নাই জীবন নিয়ে ফিরে এসেছি।’
সিলেট জেলার আল জুনায়েদ বলেন, ‘সাগরের মধ্যে আমাদের সাগর পারাপারের স্পিড বোডটি ঘুরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে জানতে পারি দালালের খপ্পরে পড়েছি দালাল আমাদের বিক্রি করে দিয়েছে।’
বরিশালের জোবেদা বেগম বলেন, ‘আজ ১০ দিন যাবত আমাদের আশকোনা হাজী ক্যাম্পে আটক করে রাখা হয়েছে। আমি এতিম, আমার বাবা-মা নাই, স্বামী নাই। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে গিয়ে সবকিছু হারালাম। আর অবৈধ পথে দেশের বাইরে যাব না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের মহাপরিচালক সোহেলী সাবরিন বলেন, ‘এ পর্যন্ত গত সেপ্টেম্বর থেকে আমরা বাংলাদেশের অনিয়মিত ৯০২ জন নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে ৪ জন নারী রয়েছে। বর্তমান আমাদের নিয়ন্ত্রণে হাজী ক্যাম্পে ২২৩ জন অনিয়মিত নাগরিক রয়েছে। এর মধ্যে ২ জন নারী। সবাইকে আমরা বিভিন্ন ভাবে কাউন্সিলিং করছি। তাদের আমরা বলছি বৈধপথে থাকলে কেন অবৈধ পথে দেশের বাইরে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা দেশের বাইরে যায় তারা অর্থনৈতিক এবং শারীরিক ভাবে ভেঙে পড়ে। তাদের শক্ত করার জন্য আমরা বিভিন্ন কাউন্সেলিং চলমান রেখেছি। কাউন্সেলিংয়ের পর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে আমরা তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব।’
কেএম/এসএ/