সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর
বাংলাদেশের আগ্রহ জনশক্তি রপ্তানি ও বিনিয়োগে
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকালে ঢাকায় পৌঁছাবেন। পরদিন বুধবার (১৬ মার্চ) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নিরাপত্তা, জনশক্তি ও বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে। সফরকালে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা-রিয়াদ সংলাপ
জানা যায়, সৌদি আরবের আগ্রহ বেশি নিরাপত্তা ইস্যুতে। ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের ব্যাপারে বাংলাদেশকে পাশে পাওয়ায় দেশটি সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এসসা ইউসেফ এসসা আল দুহাইলান।
এর আগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৩৪টি মুসলিম প্রধান দেশ নিয়ে সামরিক জোট করার ঘোষণা দিয়েছিল সৌদি আরব। এর মধ্যে বাংলাদেশও ছিল। তখন এই জোটে যোগ দেওয়া নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। যদিও পরে এ ধরনের উদ্যোগ আর আগায়নি। বৈঠকে নিরাপত্তার এই সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের আগ্রহ মূলত জনশক্তি রপ্তানি ও বিনিয়োগ নিয়ে। সৌদি আরব বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জনশক্তি বাজার। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের কিছু প্রস্তাব রয়েছে।
১৯৭৬ সালে সৌদি আরবের জনশক্তি রপ্তানি শুরু করে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত দেশভিত্তিক হিসেবে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি জনশক্তি রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সৌদি আরবে মোট ৪৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪২ জন বাংলাদেশি কর্মী গেছেন। এটি মোট জনশক্তির বাজারের ৩৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
এছাড়া রয়েছে বিনিয়োগ প্রসঙ্গ। রিয়াদের সঙ্গে অনেকগুলো বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে ঢাকা। জ্বালানি, বিদ্যুৎ, বিমানবন্দর, বন্দরসহ অনেকগুলো প্রকল্পে সৌদি আরবের আগ্রহ রয়েছে।
বিনিয়োগ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের পুরনো ও পরীক্ষিত বন্ধু। বৈশ্বিক বহুপক্ষীয় বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব একসঙ্গে কাজ করে। আগে সৌদি আরবকে কর্মী পাঠানো যায় এমন দেশ হিসেবে দেখা হতো। কিন্তু এখন জনশক্তি ছাড়াও বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশটির আগ্রহ রয়েছে।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসূচি
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। সেখান থেকে তিনি সরাসরি চলে যাবেন হোটেল সোনারগাঁওয়ে। বিশ্রাম শেষে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাত ৮টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।
পরদিন ১৬ মার্চ সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হোটেল সোনারগাঁওয়ে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করবেন। সকাল সাড়ে ১০টায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে দুদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হবে। পৌনে ১১টায় মিডিয়া ব্রিফিং। দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করবেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর বিকাল ৩টায় ঢাকা ত্যাগ করবেন তিনি।
আরইউ/আরএ/