অ্যাবসলুটলি পারফেক্ট নির্বাচন সম্ভব হবে না: সিইসি
শিক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা গুরুত্ব-সহকারে শুনেছি। আমরা লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। আমরা এগুলো পরবর্তীতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা পর্যালোচনা মূল্যায়ন করে আমাদের তরফ থেকে কিছু করণীয় আছে কি না সেগুলো আমরা নির্ধারণ করব।
তিনি বলেন, ‘সব সাধ্য তো কখনই হয় না। জিনিসটা হয় আপেক্ষিক। আরও ভালো করতে হবে, আরও ভালো করা, আরও ভালো করা। আজকের আলোচনা শিক্ষকরাও বলেছেন, কিছু দ্বিমত থাকবেই। সেটার অর্থ এই নয় অ্যাবসলুটলি পারফেক্ট করতে হবে। সেটা কিন্তু সম্ভব নাও হতে পারে, সম্ভব হবে না হয়তো।’
রবিবার (১৩ মার্চ) বিকালে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সংলাপ শেষে গণমাধ্যম-কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন। সংলাপে মতামত এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করতে হবে।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘অ্যাবসলুটলি জিনিসটা আমরা কেন? অনেক দেশেই হয় না। অনেক দেশে সেটা নাও হতে পারে। কাজেই সেটা অন্যভাবে নেবেন না। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সামর্থ্য বাড়াতে। তারা যে পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলো নিয়ে আরও হৃদ্য হয়ে কিভাবে আগামী নির্বাচনে দক্ষতাকে আরও বেশি প্রয়োগ করে আরও সুন্দর আরও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারি। এক্ষেত্রে তারাও বলেছেন সকলের সহযোগিতা লাগবে। তারা এটাও বলেছেন, সমঝোতা লাগবে। সকল দিক থেকে সকল দিকের সহযোগিতা লাগবে।’
সিইসির পক্ষ থেকে ৩০ শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও মাত্র ১৩ জন উপস্থিত এতে অংশগ্রহণমূলক বিষয়টাতে ভাটা পড়ল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এটা কিন্তু নির্বাচন না। আজকে যেটা ছিল এখানে নির্বাচন হয়নি, এখানে আমরা অনেককেই নেমন্তন্ন করেছি, খুব স্ববাভতই অনেকেরই বিভিন্ন অসুবিধা থাকতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ৩০ জনকে নেমন্তন্ন করেছিলাম ১৫ জন এসেছে। সেটা ভালোভাবেই তারা আলোচনা করেছেন। আমাদের আলোচনায় ঘাটতি হয়েছে তা না। মোটামুটি যারা আলোচনা করেছেন একজন আর এক জনের সমর্থন করে একই কথারই পুনরাত্তি হয়েছে। আরও বেশি আসলে আমরা আরও একটু খুশি হতাম। আগামীতে আমরা যদি আরও বেশি অংশগ্রহণ চাই তাহলে আর একটু বেশি দাওয়াত করব।’
অতীতের কমিশনগুলোও সংলাপ করেছে সেই সংলাপের সুপারিশগুলো কমিশন আমলে নেয়নি বলে অনেকে আসেননি সেটাই তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এবিষয়ে সিইসি বলেন, ‘পরামর্শ অতীতেও দিয়েছেন। তবে সময় বলে দিবে আমরা কতটুক পেরেছি, তারা কি পরামর্শ দিয়েছেন আমরা কতটা নিতে পেরেছি বা নিতে পেরেও কতটা ফলদয় হয়েছে সেটা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।’
সংলাপে তো অনেকে বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কঠিন আপনি কি মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ভালো হবে না, ভোট সুষ্ঠু হবে না এবিষয়ে সকলে সেভাবে বলেননি, কথাটা ঠিক নয়। তারা কেউ বলেছেন ওই নির্বাচনটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছিল, এখন সাংবিধানিক সরকার আছে এরমধ্যে আমাদের নির্বাচন করতে হবে। যেটাকে বলা হয়েছে দলীয় সরকার নির্দলীয় সরকার। আসলে সকলে এটা ওভাবে বলেননি। সকলেই বলেননি নির্দলীয় সরকার লাগবেই। এভাবে কোনো বক্তব্য শুনিনি দুই একজন হয়তো বলেছেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, শিক্ষকরাও রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টা বলেছেন এবং স্বীকার করেছেন রাজনৈতিক সমঝোতাটা গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি আকেটা সমঝোতা থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাজটা সহজ হবে। তাদের সহযোগিতার কারণে আমরা আমাদের দায়িত্বটাকে আরও সুচারুরূপে পালন করতে পারব।
এ সময় অন্য চার নির্বাচন কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমএমএ/