করোনার টিকায় ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা মহামারিতে সব টিকা ক্রয় ও টিকা দান কার্যক্রম চালাতে সব মিলিয়ে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
তিনি বলেন, এক দিনে এক কোটির বেশি ডোজ টিকা দেওয়াসহ অল্প সময়ে ২২ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
"বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২২" উদযাপন উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১০মার্চ) জাতীয় কিডনী ইন্সটিটিউটে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজী কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনায় বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যখন ভয়াবহ তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ৬ প্লাস হয়েছে। মানুষ এখন নিশ্চিন্তে আবার ব্যাবসা-বানিজ্যে মন দিতে পারছে। এগুলি এমনি এমনি হয়নি। এর জন্য স্বাস্থ্যখাতকে দিনরাত কাজ করতে হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা একদিনেই ১ কোটি ২০ লক্ষ ডোজ টিকা দিয়েছি যা একটি রেকর্ড। আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে সাড়ে ১২ কোটি ডোজ ১ম, সাড়ে ৮ কোটি ডোজ ২য় এবং ৫০ লক্ষ ডোজ বুস্টার ডোজ দিতে সক্ষম হয়েছি। এই টিকাদান কর্মসূচিতে লক্ষাধিক লোক কাজ করছে। এত বড় একটি কর্মযজ্ঞে তেমন কোন অনিয়ম বা ত্রুটি দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহস করে এত বিশাল অংকের টাকার কথা না ভেবে দেশের সকলকেই টিকার আওতায় এনেছেন বলেই দেশবাসি এখন করোনায় অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছে। মানুষ আবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে নামতে পারছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি থেকে দেশকে রুখে দেয়ায় ব্লুমবার্গ করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৮ম অবস্থানে তুলে এনেছে এবং করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।
জাহিদ মালেক জানান, দ্রুতই দেশের মানুষকে আরও বেশি সংখ্যক বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে। করোনায় একদিনে যেভাবে প্রায় এক কোটি মানুষকে গণটিকা দেয়া হয়েছে, ঠিক সেভাবে দ্রুতই বুস্টার ডোজেরও ক্যাম্পেইন করা হবে। এতে করে দেশ আরও বেশি নিরাপদ থাকবে।
দেশে কিডনি রোগির সংখ্যা ২ কোটি
কিডনি রোগ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করোনায় দিনে ২০ জন মানুষ মারা গেলে আমরা কত চিন্তায় থাকি। অথচ কিডনি রোগে দিনে ৭০ থেকে ৮০ জন মানুষ মারা যাচ্ছে, ক্যান্সারে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ মারা যাচ্ছে সেগুলি নিয়ে আমরা খুব বেশি সচেতন থাকিনা। এই রোগগুলি নিয়ে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত আছেন। প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০ হাজার মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ কারনে আমরা দেশের প্রতিটি জেলায় আলাদা করে ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ও ১০ বেডের আইসিইউ বেড করার কাজ হাতে নিয়েছি। আট বিভাগে ৮ টি আধুনিক ক্যান্সার, কিডনি চিকিৎসা হাসপাতাল নির্মান করতে কাজ শুরু করা হয়েছে। এগুলি হলে দেশের মানুষ নিজ নিজ এলাকাতেই এরকম জটিল ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা বিনামূল্যে গ্রহন করতে পারবে।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজীর পরিচালক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম বাদল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, নেফ্রলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. নিতাই চন্দ্র বিশ্বাস প্রমূখ।
এনএইচবি/এএস