টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে রোজা ভেঙে যাবে কি?
ছবি সংগৃহিত
আমরা অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করে থাকি। যেহেতু এখন রমজান মাস চলছে, সেহেতু রোজা রেখে বা সেহরি খাওয়ার পর দিনের বেলা টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা যাবে কি না এমন প্রশ্ন শোনা যায় রোজাদারদের কাছ থেকে। রোজা ভেঙে যাবে ধারণা থেকে অনেকে এভাবে দাঁত ব্রাশ করা থেকে বিরত থাকেন।
আপাতদৃষ্টিতে রোজা সহজ সরল একটি ধর্মীয় আচরণের বিষয়, কিন্তু এটি নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা বিদ্যমান। এর মধ্যে একটি হচ্ছে রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা নিয়ে। এটা নিয়ে মতভেদ রয়েছে আলেমদের মধ্যে। কেউ কেউ বলছেন রোজা রেখে দাঁত ব্রাশ করা যাবে। এতে রোজা ভাঙবে না। কেউবা বলছেন রোজা রেখে পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা মাকরুহ।
ব্রিটেনে অ্যাডভান্সড ইসলামি বিজ্ঞান এবং শারিয়া আইনের ছাত্র শাব্বির হাসান মনে করেন দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙে না। তবে তিনি রোজাদারদের সাবধানী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, রোজার দিনে মিন্ট ও বিভিন্ন স্বাদ যুক্ত টুপ পেস্টে এড়িয়ে চলার। পাশাপাশি ব্রাশে অল্প পরিমানে পেস্ট ব্যবহারেরও পরামর্শ তার।
বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ বলেন, রোজা রেখে সকাল বেলা কেউ যদি দাঁত ব্রাশ করতে চান, তাহলে তার জন্য জায়েজ রয়েছে। সেখানে ব্রাশ এবং পেস্ট দুটোই ব্যবহার করা জায়েজ রয়েছে। এতে সিয়াম নষ্ট হবে না বা সিয়ামের কোনো ক্ষতি হবে না।
কোনো কোনো আলেম বলছেন, রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট, টুথ পাউডার, মাজন বা কয়লা দিয়ে দাঁত মাজা মাকরুহ। এদের একজন মুফতি এনায়েতুল্লাহ।
তিনি মনে করেন, রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা মাকরূহ। আর পেস্ট বা মাজন গলার ভেতরে চলে গেলে রোজাই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করা যাবে না। টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে ব্রাশ করতে হলে সাহরির সময় শেষ হওয়ার আগেই করে নিবে।
মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী বলেছেন, রোজা রেখে টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করা মাকরুহ। এতে স্বাদ রয়েছে। রোজা রেখে যে কোনো জিনিসের স্বাদ গ্রহণ করা মাকরুহ। তবে মিসওয়াক ব্যবহার করতে পারবেন, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।
আরব আমিরাতের দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ বিভাগের গ্র্যান্ড মুফতি আবদেল বাসেত আহমেদ হামদাল্লাহ এই প্রসঙ্গে গালফ নিউজকে জানান, টুথপেস্ট ব্যবহারে রোজা ভাঙে না, যদি না তা গলায় পৌঁছায়। তাই রোজা অবস্থায় সতর্কতামূলক টুথপেস্ট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়। এর পরিবর্তে রোজাদাররা মিসওয়াক ব্যবহার করতে পারেন।