জুবিলী ব্যাংকের অবসায়ক নিয়োগ
বঙ্গবন্ধুর খুনি এ এম রাশেদ চৌধুরীর মালিকানায় থাকা জুবিলী ব্যাংকের অফিসিয়াল লিকুইডিটর (অবসায়ক) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে অবসরে যাওয়া বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এই আদেশ দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ব্যাংকটির ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আদালত।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক) ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমাকে অবসায়ক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনী রাশেদের মালিকানায় ছিল ব্যাংকটি, এই ব্যাংক এতদিন কীভাবে চললো, আওয়ামী লীগ ১২ বছর ধরে ক্ষতায় থাকা অবস্থাতেও এটি কীভাবে হলো, বাংলাদেশ ব্যাংক কী করেছে? এই ব্যাংক থেকে টাকা পাচার হয়েছে কিনা? এসব বিষয়ও আমাকে তদন্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৃতীয় ব্যক্তি, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইডি) শাহআলম ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবীকে বলেছিলেন, ব্যাংক যেন বন্ধ না হয়, সেই ব্যাবস্থা করতে, তিনি কেন আইনজীবীকে এটা বলেছিলেন-এটিও খতিয়ে দেখতে হবে। এসব বিষয় খতিয়ে দেখে আমি প্রয়োজন মনে করলে বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) রেফার করতে পারবো।
উল্লেখ্য আদালতের আদেশে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ই কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।
জুবিলী ব্যাংকের অবসায়ক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া আদেশে হাইকোর্ট বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরীকে ‘দ্য অফিসিয়াল লিক্যুইডিটর’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এজন্য তাকে প্রতি মাসে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারিয়া হককে অতিরিক্ত লিক্যুইডিটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে প্রতি মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। এছাড়া ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। নয় মাসের মধ্যে তাদের এ ব্যাংকের বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
প্রসঙ্গত ১৯১৩ সালের ১৫ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার জানিপুরে ‘খোকসা জানিপুর জুবিলী ব্যাংক লিমিটেড’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়ে ব্যাংকটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসা শুরু করে।
ব্যাংকটি ১৯৮৭ সালের ২৬ জানুয়ারি নাম পরিবর্তন করে হয় ‘জুবিলী ব্যাংক লিমিটেড’।
গত কয়েক বছরে ব্যাংকটি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যাংকটির অবসায়নে হাইকোর্টে আবেদন করে।
আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম, কাজী এরশাদুল আলম। অবসায়কের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল ওহাব এবং যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন একেএম বদরুদ্দোজা।
বৃহস্পতিবার আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম জানান, মূলধনের বিষয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের বিধান মানা হয়নি। এ কারণে অবসায়ন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এমএ/