ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে লড়বে সিরিয়ার ভাড়াটে বাহিনী
ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর এখন রাশিয়ার দখলে। এসব শহরে নিয়মিত টহল ও গেরিলা যুদ্ধের জন্য আরও সেনা সদস্যের দরকার। আর এ ক্ষেত্রে সিরিয়ার ভাড়াটে সৈন্যদের রাশিয়া নিয়োগ দিচ্ছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে।
কতজন সৈনিককে এভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তা জানাতে রাজি হননি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তবে তারা বলেছেন, এর মধ্যেই অনেকে রাশিয়ায় চলে গেছেন এবং ইউক্রেনে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সিরিয়ার ডেইর ইজ্জর সংবাদপত্রের তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়া থেকে যারা ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে যেতে চান, এ রকম স্বেচ্ছাসেবীদের ২০০ থেকে ৩০০ ডলার করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। একেকবারে তাদের অন্তত ছয়মাস সেখানে লড়াই করতে হবে।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা মনে করেন, সিরিয়ার বহু বছরের গৃহযুদ্ধে অভিজ্ঞ এই যোদ্ধারা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বড় শহরগুলো দখলে রাখতে রুশ সেনাবাহিনীকে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সাবেক সেনা সদস্যরা ইউক্রেনের পক্ষে লড়াই করতে শুরু করেছে বলেও খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ হামলা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। এরপর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ধ্বংস করে বিভিন্ন বিমানঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সোমবার (৭ মার্চ) ১২তম দিনেও হামলা অব্যাহত রয়েছে। হামলা থেকে বাঁচতে ইউক্রেন থেকে ১০ লাখের বেশি মানুষ পোল্যান্ডে প্রবেশ করেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। রুশ হামলা ঠেকাতে পশ্চিমা দেশগুলো নানা রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করে চলেছে।
যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বেলারুশ সীমান্তে দুই দফায় বৈঠকে বসেন। তবে দুবারই বৈঠক কোনো কাজে আসেনি। ইউক্রেন বলছে, তারা চলতি সপ্তাহে আবারও বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
এগারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১২তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/