আগুনে ঘি দেবেন না, চীনের হুঁশিয়ারি
পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক অভিযান কমেনি। একের পর এক কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় সমালোচনা করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি চলমান রুশ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আগুনে তেল’ না ঢালার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রবিবার (৬ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে বলেছেন, ইউক্রেনে আগুনে তেল দেওয়ার মতো পদক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন।
গতকাল দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা টেলিফোনে কথা বলেন। সে সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব দেখবে কারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ান চলমান সংকট দ্রুত নিরসনে ‘সমঝোতা’র আহ্বান জানিয়ে বলেছেন ইউরোপের নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার নিরাপত্তার কথা ভেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে ন্যাটোর সম্প্রসারণের নেতিবাচক দিকগুলোর উপর মনোযোগ দিতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্তায় জানানো হয়, ব্লিনকেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ব ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে এবং এই আগ্রাসনের কারণে মস্কোকে যেন চরম মূল্য দিতে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
চীন বলেছে সব দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। কিন্তু রাশিয়ার উপর অবরোধের কারণে রাজনৈতিক সমাধানের প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
দশ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১১তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/