একদিনে মারিওপোল ছাড়তে পারবেন ৯ হাজার ইউক্রেনীয়
একদিনে ৯ হাজার বাসিন্দা ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্ব শহর মারিওপোল শহর ছাড়তে পারবেন। 'মানবিক করিডোর' ঘোষণার পর ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্ব শহর মারিওপোল থেকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
শনিবার ইউক্রেনে থাকা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিনিধি জোয়েল গুন্টারের সাথে আলাপকালে মারিওপোলের ডেপুটি মেয়র সের্গেই ওরলভ জানিয়েছেন, একদিনে ৯ হাজারের বেশি বাসিন্দা শহর ছাড়তে পারবে না।
ওরলভ বলেন, যুদ্ধবিরতির জন্য সারা রাত আলোচনা চলেছে। কয়েক ঘণ্টা আগে ‘মানবিক করিডোর’ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'মানবিক করিডোর' খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর আমরা অবিলম্বে লোকেদের বের করে আনার জন্য আমাদের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমরা ৫০টি বাসের ব্যবস্থা করেছি এবং আমরা মনে করি ৫ থেকে ৬ হাজার বাসিন্দা এই বাসে করে জাপোরিঝিয়ায় যেতে পারবে।
‘মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়েও শহর ছাড়তে পারবে। আমরা মনে করি, যুদ্ধবিরতি বহাল থাকলে মোট ৭ থেকে ৯ হাজার মানুষ বাসে এবং ব্যক্তিগত গাড়ি দিয়ে শহর থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।’
তিনি জানান, কোনো ট্রেন চলাচল করছে না, কারণ রাশিয়ান সৈন্যরা রেলপথের অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে।
মারিওপোলের ডেপুটি মেয়র বলেন, আমরা এখনো নিশ্চিত নই যে, যুদ্ধবিরতি আগামীকাল অব্যাহত থাকবে কিনা। রাশিয়া এখনো আমাদের নিশ্চিত করেনি। আমরা বর্তমানে সেটি নিয়েও কাজ করছি। শহরটি চারদিন ধরে অবকাঠামোহীন ছিল, তাই মানুষের কাছে তথ্য পাওয়া কঠিন।
এদিকে বেশ কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনের মারিওপোল শহর ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় ঘটার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখান থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে ‘মানবিক করিডোর’ খোলার আহ্বান জানান মারিওপোলের মেয়র ভাদিম বোইচেঙ্কো।
এর কিছুক্ষণ পর ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্ব শহর মারিওপোল ও ভলনোভাখার শহরের বাসিন্দাদের জন্য ‘মানবিক করিডোর’ খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। এসময় দুই শহরে লড়াই বন্ধ রাখা হবে বলেও জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে ২ লাখ সেনা জড়ো করে রাশিয়া। রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বারবার সতর্কতা দিয়েছিল; কিন্তু বরাবরই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
এরপর গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
কেএফ/