ইউক্রেনের ২য় বৃহৎ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখলের পথে
ইউক্রেনের আরও একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখলের পথে রুশ বাহিনী। শুক্রবার জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানান, কিয়েভের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত দ্বিতীয় বৃহৎ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইউঝোক্রেইনস্কের কাছেই রয়েছে রুশ সেনারা।
জেফোরেশিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে মস্কোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমাদেশগুলো। ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দখল নিতে বৃহস্পতিবার হামলা চালায় রুশ সেনাবাহিনী। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আগুন ধরে যায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে। শুক্রবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা এক টুইট বার্তায় বলেন, জাপরিঝাঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গোলাগুলির ফলে সেখানে আগুন জ্বলছে। তার দাবি, ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিস্ফোরিত হলে তা হবে চেরোনোবিলের থেকে ১০ গুণ বড়।
এদিকে ন্যাটোর বৈঠকে ইউক্রেনে নো ফ্লাই জোন চালু না করার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দেশটিতে সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির দায় পশ্চিমা নেতাদেরও নিতে হবে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও ন্যাটো মহাসচিব জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। কিয়েভ, হারকিভসহ ইউক্রেনজুড়ে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটার নিষিদ্ধ করল মস্কো। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে বিবিসি, সিএনএনসহ বেশ কিছু গণমাধ্যম। যুদ্ধের প্রতিবাদে বিশ্বের অনেক দেশে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে ২ লাখ সেনা জড়ো করে রাশিয়া। রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বারবার সতর্কতা দিয়েছিল; কিন্তু বরাবরই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
এরপর গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
কেএফ/