রাশিয়া-ইউক্রেন কাউকেই ছাড়বেন না এরদোয়ান
রাশিয়া-ইউক্রেন দুই পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘তুরস্ক রাশিয়া বা ইউক্রেন কারও সঙ্গেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারবে না।’ ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এরদোয়ান আরও বলেন, ‘যুদ্ধের উত্তেজনা কমাতে আঙ্কারা মন্ট্রিক্স কনভেনশন বাস্তবায়ন করবে।’
এর আগে রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) তিনি রাশিয়ার আক্রমণকে ‘যুদ্ধ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ১৯৩৬ সালের মন্ট্রিক্স কনভেনশন অনুযায়ী, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দারদানেলস ও বসফরাস প্রণালী আটকে দিয়ে ভূমধ্যসাগর ও কৃষ্ণ সাগরের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে পারে তুরস্ক।
তবে সোমবারের বৈঠকের পর এরদোয়ান ইউক্রেনে আগ্রাসনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা শক্তিগুলোর অবস্থানকে ‘দ্বিধাগ্রস্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে সমালোচনা করেন। তবে তিনি রাশিয়ার আক্রমণকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি ব্যর্থ আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার লক্ষণ। তুরস্ক ন্যাটোসহ সব জোটকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে না। তবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর জাতীয় স্বার্থ এড়িয়ে যাবে না তুরস্ক।’
এদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বাহিনী। তবে ইউক্রেন সামরিক বাহিনী ও গেরিলা প্রতিরোধে তা এখনো পূর্ণ রুশ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আর এ লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে প্রায় ৪০ মাইল দীর্ঘ রাশিয়ার একটি সামরিক গাড়ি বহর। কিয়েভের উত্তরাঞ্চলে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্যাটেলাইটে এই দীর্ঘ সেনা বহরের চিত্র ধরা পড়েছে। মার্কিন বেসরকারি কোম্পানি মাক্সার এই ছবি ধারণ করেছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
পাঁচ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের ষষ্ঠ দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/