এবার রাশিয়ার জন্য বন্ধ হচ্ছে পশ্চিমাদের আকাশপথ
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। একই সঙ্গে পশ্চিমের অনেক দেশ তাদের আকাশপথ রাশিয়ার জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এক কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এ তালিকায় ইউরোপের বেশির ভাগ দেশ যোগ দিতে যাচ্ছে।
এদিকে আগামী তিন মাসের জন্য জার্মানির আকাশসীমায় রাশিয়ার বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির পরিবহণ মন্ত্রণালয়।
জার্মানি আকাশসীমায় রুশ বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াও৷ এর আগে শুক্রবার একই ঘোষণা দিয়েছে পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, বুলগেরিয়া ও চেক রিপাবলিক৷
আকাশপথে ইউরোপের বাধা পাওয়ার পর রাশিয়ার উড়োজাহাজগুলোর পশ্চিমে যাত্রার জন্য খুব কমপথই খোলা রয়েছে।
ইউক্রেনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার মালিকানায় থাকা উড়োজাহাজকে যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, স্লোভেনিয়া ও বাল্টিক দেশগুলোর আকাশসীমায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল না।
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু জানান, যারা মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকে ইউরোপের আকাশ তাদের জন্য উন্মুক্ত; যারা নির্মম আগ্রাসন চালায় তাদের জন্য নয়।
অন্যদিকে রাশিয়ার উড়োজাহাজগুলোর জন্য ইতালির আকাশপথ বন্ধ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
আকাশপথ বন্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে টুইটারে এক পোস্টে জানিয়েছেন ফিনল্যান্ডের পরিবহনমন্ত্রী টিমো হারাক্কা। দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটারের আকাশসীমান্ত রয়েছে। এ তালিকায় যোগ দিতে যাচ্ছে ডেনমার্ক, সুইডেন, আইসল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াও।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এদিকে আজ ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাজধানী কিয়েভের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাসিলকিভে একটি তেলের ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে কিয়েভবাসীকে বিশেষ সতর্ক থাকার বথা বলেছে ইউক্রেন সরকার।
রাজধানী কর্তৃপক্ষ রাজধানীবাসীকে বিষাক্ত ধোঁয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে। কিয়েভের বাসিন্দাদের ঘরের জানালা ভালো করে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রুশ হামলার তৃতীয় রাতে কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠে। মধ্যরাতের আগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।
তিন দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের চতুর্থ দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এমএমএ/