শান্তি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
বিদেশি মার্সেনারিদের যুদ্ধের ডাক ইউক্রেনের
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার। এখন তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেআন্তর্জাতিক মার্সেনারি বা স্বেচ্ছাসেবকদের ডাকছে। বিদেশিদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক ‘সৈন্য দল’ গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর আগে বেলারুশে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন।
রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিদেশি মার্সেনারি বাহিনী গঠনের বিষয়ে জেলেনস্কি এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, ‘এটি ইউক্রেনের জন্য আপনার সমর্থনের প্রধান প্রমাণ হবে।’ এদিকে ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযান আরও জোরদার করতে সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া।
বেলারুশে আলোচনায় বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর এ নির্দেশ দেয় রুশ কর্তৃপক্ষ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান আক্রমণ সব দিক থেকে আরও জোরদার করতে বলা হয়েছে। বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এটি অন্যতম বড় হামলার ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ওই যুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা শুরু করে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
এদিকে আজ ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রাজধানী কিয়েভের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ভাসিলকিভে একটি তেলের ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে কিয়েভবাসীকে বিশেষ সতর্ক থাকার বথা বলেছে ইউক্রেন সরকার।
রাজধানী কর্তৃপক্ষ রাজধানীবাসীকে বিষাক্ত ধোঁয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে। কিয়েভের বাসিন্দাদের ঘরের জানালা ভালো করে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রুশ হামলার তৃতীয় রাতে কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠে। মধ্যরাতের আগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।
তিন দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ যুদ্ধের চতুর্থ দিন। রাজধানী কিয়েভ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে রুশ সেনারা। এ হামলা শুরু পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/