রাশিয়ার উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার বোঝা
রাশিয়াকে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া এক ভাষণে মস্কোর উপর সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞা দেন তিনি।
রাশিয়ার প্রধান প্রধান ব্যাংকের সম্পদ ফ্রিজ করা এবং উচ্চ প্রযুক্তি-সংক্রান্ত পণ্যের আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা দেন বাইডেন। ইউক্রেনে আক্রমণের কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ জি-৭ মিত্রদের কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান তিনি।
বাইডেন জানান, রাশিয়া কোনো কারণ ছাড়াই পূর্বপরিকল্পিতভাবে যুদ্ধ শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র যা আগে থেকেই জেনে রাশিয়াকে সতর্ক করেছিল। তবে রাশিয়া পশ্চিমাদের দেওয়া সব আলোচনার প্রস্তাব উপেক্ষা করে একতরফা ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা চালায়। যার পরিনাম মোটেই ভালো হবে না এবং এর দায় রাশিয়াকেই নিতে হবে।
রাশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম ব্যাংকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যাতে দেশের ব্যাংকিং খাতের এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ রয়েছে এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপিত এসব ব্যাংকগুলোর মোট সম্পদের মূল্যমান এক ট্রিলিয়ন ডলার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো ভূখণ্ডের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করবে। তবে ইউক্রেনে সেনা পাঠানো হবে না বলেও জানান তিনি।
পুতিনকে বিদেশে সেনা পাঠানোর ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা রুশ পার্লামেন্টের ৩৫১ জন সদস্যের সম্পদ জব্দ ও ভিসা বাতিল করার পাশাপাশি ২৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার দুটি ব্যাংক ও তাদের ৪২টি শাখাসহ ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা পাঁচ ধনকুবেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। যুক্তরাজ্য রাশিয়ার পাঁচ ব্যাংক ও তিন ধনকুবেরের ওপর এবং জাপান রাশিয়ার সরকারি বন্ড ও দুই রাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ভিসায় নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এ ছাড়া রাশিয়ার ২৭ ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপের মূলধন বাজারে রাশিয়ার কর্মকাণ্ড সীমিত করতেও পদক্ষেপ নিচ্ছে ইইউ। ইইউর ব্যাংকগুলোতে থাকা দেশটির তহবিল আটকে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি ইইউর সঙ্গে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে বাধা আসছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের মধ্যে নর্ডস্ট্রিম ২ গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলত্জ। রাশিয়া থেকে জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে এ প্রকল্প নিয়ে কথা চলছিল দেশ দুটির মধ্যে।
কানাডাও রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন না দেশটির নাগরিকেরা। অঞ্চল দুটিকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে ভোট দেওয়া রুশ পার্লামেন্ট সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। কানাডার কালোতালিকায় পড়বে রাশিয়ার দুটি রাষ্ট্র পরিচালিত ব্যাংকও।
এসএ/