ফেসবুকে সাময়িক নিষিদ্ধ তসলিমা নাসরিন
কিছুদিন আগেই ফেসবুক তসলিমা নাসরিনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেছিল। এবার তাকে সাময়িক নিষিদ্ধ করল এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম!
অনুরাগীদের অনুমান, তার জ্বালাময়ী লেখা, বিতর্কিত পোস্ট সম্ভবত এর কারণ। ২১ ফেব্রুয়ারিও মাতৃভাষা নিয়ে ফেসবুকে লিখেছিলেন তসলিমা নাসরিন। মাতৃভূমি বাংলাদেশে রেখে যাওয়া স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছিলেন লেখিকা। কীভাবে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়? তারই এক টুকরো উঠে এসেছিল তার লেখায়। ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমের পডকাস্টে নিজের জমে থাকা অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এরপরেই ফেসবুকে সাময়িক নিষিদ্ধ তিনি। নিষিদ্ধ হয় তার পোস্ট! লেখিকা সে কথা ব্যঙ্গের সুরে জানিয়েছেন তার পাতায়, ‘আমার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারির উপহার!’
ফেসবুকে লেখিকা পোস্ট দিয়ে দেখিয়েছেন, কীভাবে ধাপে ধাপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাকে। ফেসবুকের নিয়মে, ২৮ দিন তার পোস্ট সবার নিচে থাকবে। ৪৫ ঘণ্টা তিনি কোনো পোস্ট বা মন্তব্য লিখতে পারবেন না। আগামী ৫ দিন তিনি কোনো ফেসবুক গ্রুপে যোগ দিতে পারবেন না।
তসলিমা তার শাস্তির নমুনা পেশ করতেই এবার তার হয়ে মুখ খুলেছেন অনুরাগীরা। কারও যুক্তি, ‘রিচ নিয়ে বড় সমস্যা দেখি না। আপনার পোস্ট যারা পড়েন, তারা খুঁজেই পড়েন।’ কেউ স্পষ্ট দাবি করেছেন, ‘এগুলো ঘটে পোস্ট রিপোর্ট হয় বলে। তোমার শত্রুর অভাব নেই।’ কারওর মতে, ‘আপনার পোস্টে অপ্রিয় সত্য থাকে বলেই এ রকম হয়। প্রমাণ করে, এখনও নিরীহ কিছু শব্দ সত্যি হলে কতটা শক্তিশালী হতে পারে।’
১৭ জানুয়ারি শাঁওলি মিত্রর মৃত্যুর পরেই মৃত্যু সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তসলিমা। সেই পোস্টে তার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন। প্রথম পংক্তিতেই লিখেছিলেন, ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চার দিকে। প্রচার হোক যে, আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান গবেষণার কাজে।’ এটুকু পড়েই ফেসবুক বুঝে নিয়েছিল, লেখিকা আর বেঁচে নেই! সঙ্গে সঙ্গে তার আইডি-তে ‘রিমেমবারিং’ শব্দের যোগ। মার্ক জুকারবার্গ এবং তার দলের এই কীর্তিকলাপ হজম করতে কষ্ট হয়েছিল অনুরাগীদের। তাদের দাবি, পুরো পোস্ট পড়লেই স্পষ্ট তসলিমা শাঁওলি মিত্রের আদলে একটি শেষ ইচ্ছাপত্রের ভাবনা জানাতে চেয়েছেন। সে সব না বুঝে জীবিতকে কী করে ‘মৃত’ বানিয়ে দিল নেট মাধ্যম? সে সময়েও লেখিকা বিদ্রূপ করে লিখেছিলেন, ‘জি-হা-দিদের প্ররোচনায় ফেসবুক আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল প্রায় একুশ ঘণ্টা আগে। এই একুশ ঘণ্টায় আমি পরকালটা দেখে এসেছি।’
গত নভেম্বরেও একইভাবে ফেসবুক নিষিদ্ধ করেছিল তাকে। সেই সময়ে তসলিমার দাবি ছিল, ‘জেহাদ, জেহাদি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কিছু লিখলেই আমার মতো একজন মানবাধিকার কর্মীকে নিষিদ্ধ করছে ফেসবুক।’
টিটি/