এবার রাশিয়ার সামরিক মহড়া তদারকি করবেন পুতিন
ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে ব্যাপক বিরোধ চলার মধ্যেই বড় একটি ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া শুরু করার ঘোষণা দিল রাশিয়া।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজে সশরীরে উপস্থিত থেকে এই মহড়া পর্যবেক্ষণ করবেন। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে এই মহড়া শুরু হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মহড়ায় আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তাছাড়া দক্ষিণ সামরিক জেলার বিমান বাহিনীর পাশাপাশি উত্তর ও কৃষ্ণ সাগরের বাহিনীও এতে অংশ নেবে।
মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠককালে বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো জানান, শনিবারের মহড়া দেখতে তিনিও উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেন, যেকোনো দিন রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে। গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া আনুমানিক এক লাখ ৫০ হাজার সেনা মোতায়েন করে। এ বিষয়েই পশ্চিমাদেশগুলো নজর রাখছে। তবে রাশিয়া শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে কিয়েভে আগ্রাসন চালানো হবে না।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, শনিবারের মহড়া নিয়ে রাশিয়া খুবই স্বচ্ছ অবস্থানে রয়েছে। এতে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মহড়াটিতে পুতিনের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রাশিয়া কিছু সেনাকে ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করে। কিন্তু ন্যাটোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সংখ্যা আরও বাড়াচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়া সেনা প্রত্যাহারে কথা জানালেও এখন ন্যাটোর পক্ষ থেকে ভিন্ন তথ্য জানানো হচ্ছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।
ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়, মূলত সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির করতেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। কারণ, ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে, এবং ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।
আরএ/