ভারতের তামিলনাড়ুর শতবর্ষী ম্যাগাজিনে মোদির ব্যঙ্গচিত্র, ওয়েবসাইট ব্লক নিয়ে বিতর্ক

কার্টুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত-পায়ে শেকল বাঁধা অবস্থায় বসে থাকার চিত্র। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের তামিলনাড়ুর শতবর্ষী ম্যাগাজিন ‘ভিকাতান’ (Vikatan) এক ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে বিতর্কের মুখে পড়েছে। ওই কার্টুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত-পায়ে শেকল বাঁধা অবস্থায় বসে থাকার চিত্র আঁকা হয়। ব্যঙ্গচিত্রটি প্রকাশের পর ম্যাগাজিনটির ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানোর পরই ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ তুলছেন বিরোধী দলগুলো।
১৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ব্যঙ্গচিত্রটিতে দেখা যায়, ট্রাম্পের সামনে মোদির হাত-পায়ে শেকল বাঁধা অবস্থায় বসে আছেন। এটি মূলত আমেরিকা থেকে ভারতীয় অভিবাসীদের হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনার প্রতিবাদে আঁকা হয়েছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে মোদির আমেরিকা সফরের দৃশ্যকে ব্যঙ্গ করে তুলে ধরা হয়।
কার্টুনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতি কে আন্নামালাই অভিযোগ করেন যে, এটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চরম অবমাননাকর। তিনি প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানিয়েছেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগানের কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।
এরপর থেকেই ‘ভিকাতান’ ম্যাগাজিনের ওয়েবসাইটটি আর খোলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ম্যাগাজিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেন ওয়েবসাইটটি ব্লক করা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা চলছে এবং বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপন করা হবে।
ওয়েবসাইট বন্ধের ঘটনায় বিরোধী দলগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ও ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিন এক টুইটবার্তায় বলেছেন, ‘শতবর্ষী ভিকাতানের ওয়েবসাইট ব্লক করে দেওয়া খুবই দুঃখজনক। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ গণতন্ত্রের জন্য অশুভ সংকেত। এটি বিজেপির ফ্যাসিবাদী আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ।’
ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা মানেই গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরা। শতবর্ষী ভিকাতানের ওয়েবসাইট বন্ধ করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি। আমরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকব এবং ওয়েবসাইট পুনরায় চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
তবে কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
