গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন দিল ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘাত অবসানের পথে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী রবিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ। তিনি এক্সে দেওয়া বার্তায় জানিয়েছেন, চুক্তি পূর্ণ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হলে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, চুক্তি বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে ইসরায়েল।
যদি এই চুক্তি সফলভাবে কার্যকর হয়, তাহলে গাজার সংঘাতে বিপর্যস্ত মানুষের জন্য এটি স্বস্তি বয়ে আনবে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিতিশীলতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত কয়েক মাসে লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হিজবুল্লাহ ও হুতির মতো ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ইসরায়েল, যা এই চুক্তির গুরুত্ব আরও বাড়িয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের ঐকমত্যের খবর প্রথম প্রকাশ করে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার। পরে শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, চুক্তি বাস্তবায়নের পাশাপাশি জিম্মি মুক্তির বিষয়টিও নির্ধারিত কাঠামো অনুযায়ী এগোবে। আশা করা হচ্ছে, রবিবার থেকেই জিম্মিদের মুক্তি শুরু হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরের সহিংসতার শুরুতে একবার স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। কিন্তু এরপর কয়েক দফা আলোচনা সত্ত্বেও আর কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সাম্প্রতিক উদ্যোগে হামাস ও ইসরায়েল একমত হলেও ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি নেতারা চুক্তির বিরোধিতা করছেন।
যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করে জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মরিচ পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। তবুও মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
চুক্তি নিয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও হামাসের কয়েকটি শর্ত মানা নিয়ে বিতর্কের কারণে তা একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। সব পক্ষের সমঝোতায় চুক্তি কার্যকর হলে এটি মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।