কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে ভারত, অভিযোগ ট্রুডোর
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের বিরুদ্ধে এই প্রথম পরিষ্কারভাবে কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার নাগরিক এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানপন্থি আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা ইস্যুতে এ অভিযোগ করেছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে বিদেশি কোনো সরকারের হাত রয়েছে কি না— তা তদন্ত করছে কানাডার বিশেষ তদন্ত সংস্থা ‘ফরেন ইন্টারফেয়ারেন্স কমিশন’। এ সংস্থাটি কানাডায় ‘হগ কমিশন’ নামে পরিচিত। হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন এ কমিশনের কর্মকর্তারা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) হগ কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। এ সময় কর্মকর্তাদের এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রুডো বলেন, ভারত যে কানাডার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে- সে ব্যাপারে আমাদের আগেও পরিষ্কার ধারণা ছিল এবং এখন এটি আমাদের কাছে আরও বেশি স্পষ্ট ও নিশ্চিত।
ট্রুডো জানান, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে ভারতের সরকারি এজেন্টরা যুক্ত— তা দু’টি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছেন তিনি। এ দুই সূত্রের প্রথমটি হলো কানাডার নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা এবং দ্বিতীয়টি হলো পঞ্চনেত্র জোট (ফাইভ আইস অ্যালায়েন্স)।
পঞ্চনেত্র জোট হলো যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড— এই পাঁচ দেশের মধ্যকার গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান সংক্রান্ত একটি জোট বা নেটওয়ার্ক।
তিনি বলেন, প্রথমে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা আমাকে বলেছিল, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতের সরকারি এজেন্টদের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে। তারপর আমি পঞ্চনেত্র জোটের অন্যান্য নেতাদের এ ব্যাপারটি অবহিত করার পাশাপাশি এ ইস্যুতে জোটের সহযোগিতা কামনা করি। এরপর পঞ্চনেত্র জোট পৃথকভাবে বিষয়টির তদন্ত শুরু করে এবং গত আগস্টের প্রথম দিকে জোটের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আমাকে বলেন এটা ব্যাপক ও অবিশ্বাস্যভাবে সত্য যে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের এজেন্টরা জড়িত।
গত বছর নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রথমবার ট্রুডো অভিযুক্ত করেন। সেদিন কানাডার পার্লামেন্টে দেয়া এক ভাষণে ট্রুডো বলেন, এ অভিযোগের পক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ তার কাছে রয়েছে।
মূলত তারপর থেকেই কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে দু’দেশের মধ্যে, যার মিমাংসা এখনও হয়নি। এই দ্বন্দ্বের জেরে উভয় দেশই সম্প্রতি পরস্পরের রাষ্ট্রদূতসহ গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে। সার্বিকভাবে, বর্তমানে কার্যত তলানিতে ঠেকেছে ভারত-কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক।