অপরিচিত মহিলাকে 'ডার্লিং' বলা যৌন হয়রানি: কলকাতা হাইকোর্ট
ছবি সংগৃহিত
কোনও অপরিচিত মহিলাকে ডার্লিং (Darling) সম্বোধন আইনত অপরাধ। এর সঙ্গে যৌন আবেদনমূলক একটা ব্যাপার জড়িত থাকে। শুক্রবার এক মামলার রায় দিতে গিয়ে এমনই জানিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কোনও ব্যক্তি কখনই অচেনা কোনও মহিলাকে ডার্লিং বলে সম্বোধন করতে পারেন না, এটা অমার্জিত এবং ফৌজদারি অপরাধ। এক্ষেত্রে সেকশন ৩৫৪ এ ধারা আরোপিত হতে পারে।
বার অ্য়ান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, গত বছর দুর্গাপুজোর সময় এক মহিলা কনস্টেবলকে ‘কেয়া ডার্লিং, চালান করনে আই হ্যায় কেয়া?’ বলে মন্তব্য করেন এক ব্যক্তি। এরপরই দায়ের হয় অভিযোগ। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলাও দায়ের হয়। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তিন মাসের সাধারণ কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি তার উপর যে দুটি ধারা লাগু করা হয়েছে তার প্রত্যেকটির জন্য ওই ব্যক্তিকে ৫০০ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বার অ্য়ান্ড বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই বিচারপতি সেনগুপ্ত সেকশন ৩৫৪এ-র কথা উল্লেখ করে বলেন, এক অচেনা মহিলাকে তিনি পুলিশ কনস্টেবল হোন অথবা নাই হোন সেটা বিবেচ্য নয়, রাস্তায় তাকে এইভাবে ডাকা, বা তার প্ৰতি এমন শব্দ প্রয়োগ কখনই উচিৎ নয়। পাশাপাশি ওই ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় থাকুন অথবা নাই থাকুন। একজনের অপিরিচিত মহিলার কাছে এই ধরনের ডার্লিং শব্দটির ব্যবহার যৌন কটাক্ষমূলক শব্দ। মন্তব্য বিচারপতির।
রোববার (৩ মার্চ) বিচারপতি সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মহিলা কনস্টেবলের প্রতি যুবকের মন্তব্যে যৌন ইঙ্গিত ছিল। যুবক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। সেটি একটি উৎসবের রাত ছিল। যে অর্থে তিনি ‘ডার্লিং’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন, তা যে কোনও মহিলার কাছে অসম্মানের।
বার ও বেঞ্চের প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি। এই বিষয়ে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের মন্তব্য যদি একেবারে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে করা হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে অপরাধের গুরুত্ব অনেকাংশে বেড়ে যায়।