পিকনিকের নৌকা ডুবে শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ ১৬ জনের মৃত্যু
ছবি সংগৃহীত
স্কুলের পিকনিকের নৌকা উল্টে কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুজন শিক্ষক এবং বাকি ১৪ জন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ২০ জনকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারীরা।
ভারতের গুজরাটে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে ভারোদা শহরের হার্নি লেকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঘাবি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, নৌকায় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী উঠেছিল। এসময় নৌকায় কোনো লাইফ-জ্যাকেটও ছিল না বলে জানিয়েছেন তারা।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে বিকেল ৫ টার দিকে যখন ভাদোদরার ওয়াঘোদিয়া রোডে অবস্থিত নিউ সানরাইজ স্কুলের শিশুরা পিকনিকের জন্য বেরিয়েছিল। যেখানে ক্লাস ওয়ান থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ছিল। নৌকাটির সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১৪ জন হলেও দুর্ঘটনার সময় চার অপারেটরসহ সেখানে ৩১ জনেরও বেশি মানুষ উঠেছিল।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এর উদ্ধারকারীরা সন্ধ্যা পর্যন্ত বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের এবং মৃতদেহের সন্ধানে অভিযান চালায়। এসময় অন্তত ১৩ শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরপরই ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ভাসমান নৌকায় উদ্ধারকারীরা অন্তত অর্ধ ডজন ডুবুরি বেঁচে থাকা বা মৃতদেহের খোঁজে করছে।
এই দুর্ঘটনাকে ১১ আগস্ট, ১৯৯৩ সালের পর শহরের সবচেয়ে মারাত্মক নৌযান দুর্ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেই বছর সুরসাগর হ্রদে একটি অতিরিক্ত লোক বহন করা নৌকা ডুবে ২২ জন মারা গিয়েছিল।
নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করে গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি এএনআইকে জানান, তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী জোরালো তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত করা হচ্ছে। হর্ষ সাংঘভি আরও জানান, একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য দল গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
ভাদোদরার পুলিশ কমিশনার অনুপম সিং গাহলাউত জানিয়েছেন, বোট পরিচালনার জন্য চুক্তিটি ছিল শ্রী কোটিয়া প্রজেক্ট নামের একটি ফার্মের সঙ্গে। যা পরেশ শাহ নামে একজন ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। তিনি বলেন, আমরা নৌকার মালিক এবং এর ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩০৪ সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা করেছি।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের পরিবারের জন্য ৫০ হাজার রুপি দেয়ার ঘোষণা করেছেন। এক্সে করা এক পোস্টে তিনি লেখেন, “ভদোদরার হারনি হ্রদে নৌকাডুবির কারণে প্রাণহানির ঘটনায় আমি ব্যথিত। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে আমার সহমর্মিতা। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।