চীনের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিতে জো বাইডেনকে চিঠি
চীনের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিতে জো বাইডেনকে চিঠি
চীনের শিশুদের মধ্যে রহস্যজনক নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে যাতায়াত বন্ধ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির পাঁচ রিপাবলিকান সিনেটর। খবর রয়টার্সের।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সিনেটর মার্কো রুবির নেতৃত্বে সিনেটররা এ চিঠি দিয়েছেন। মার্কো রুবি মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের গোয়েন্দা কমিটির শীর্ষ রিপাবলিকান নেতা। এ ছাড়া চিঠিতে স্বাক্ষর করা অন্য সিনেটররা হলেন, জেডি ভ্যান্স, রিক স্কট, টমি টিউবারভিল ও মাইক ব্রাউন।
বাইডেনকে দেওয়া চিঠিতে মার্কিন সিনেটররা বলেছেন, নতুন এই রোগের ফলে সৃষ্ট বিপদ সম্পর্কে আরও না জানা পর্যন্ত আমাদের অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত।
সম্প্রতি চীনের রাজধানী বেইজিং, পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লিয়াওনিংসহ বিভিন্ন শহর ও প্রদেশের শিশুদের মধ্যে ‘রহস্যজনক’ নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার আক্রান্ত শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন অভিভাবকরা। শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর এরই মধ্যে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে চীনা সরকারের কাছে বিস্তারিত তথ্যও চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। চীনের সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্পর্কিত অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তাবিষয়ক এই সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও'র আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোগটি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করেছে চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিশন জানিয়েছে, আক্রান্ত শিশুদের পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর তাদের দেহে নতুন ধরনের কোনো জীবাণু পাওয়া যায়নি, বরং মাইকোপ্লাজমা নামে এক ধরনের পরিচিত ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে।
মাইকোপ্লাজমা বেশ পরিচিত একটি ব্যাকটেরিয়া এবং এই ব্যাকটেরিয়া শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি- উভয়ের দেহেই সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। বয়স্কদের মধ্যে যারা এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের শিকার হন, তাদের মধ্যে ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি ও মৃদু শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা যায় এবং সাধরণ ওষুধে কিংবা ওষুধ ছাড়াই এক বা দু’সপ্তাহের মধ্যে তা সেরে যায়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে তা খানিকটা ভিন্ন। কারণ, তাদের শ্বাসতন্ত্র বয়স্কদের মতো শক্তিশালী নয়। ফলে শিশুদের ক্ষেত্রে ‘রহস্যময়’ এই নিউমোনিয়া সত্যিকারের নিউমোনিয়া হয়ে গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে।
ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের পাঠানো এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, নতুন কোনো জীবাণু এই নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী নয়। তাছাড়া এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের স্বীকৃত ওষুধও বাজারে রয়েছে। ফলে যদি চীনের বাইরে এই ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’ ছড়িয়েও পড়ে তাহলেও তা করোনা মহামারির মতো বড় কোনো হুমকি সৃষ্টি করবে না।