ফিলিস্তিনকে সাড়ে ৬ কোটি ডলার সহায়তা দেবে জাপান
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজ্জা উপত্যকার যুদ্ধ বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার মানবিক সহায়তা প্রদান করবে জাপান। দেশটির অর্থমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া এ ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার রাজধানী টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেওয়া ছাড়াও ইহুদি ও ফিলিস্তিনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
কামিকাওয়া বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিচ্ছি এবং আমরা আশা করব, এই টাকা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বেসামরিক লোকজনের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।’
‘জাপান দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের (টু স্টেট সলিউশন) পক্ষে। আমরা মনে করি, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন যদি পরস্পরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে না থাকতে পারে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল সম্ভব নয়।’
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত এক মাসের অভিযান ও সহিংসতার ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে কোনো বক্তব্য দেননি জাপানের অর্থমন্ত্রী। তবে চলতি মাসেই জাপানে বিশ্বের সাত শিল্পোন্নত দেশের জোট জি-৭ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সম্মেলনে হামাস ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক যুদ্ধ আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বা এজেন্ডা থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর গাজার বেসামরিকদের জন্য ১ কোটি ডলার মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছিল জাপান।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তপথ ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ওই দিন শেষ রাত থেকে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ার পর বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেড়া ভেঙ্গে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েক শ’ হামাস যোদ্ধা এবং শত শত ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যার পাশপাশি ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় তারা।
জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ), যা এখনও চলছে। গত শনিবার থেকে আইএএফের পাশাপাশি গাজায় অভিযান শুরু করেছে স্থল বাহিনীও।
গত প্রায় এক মাসের যুদ্ধে হামাসের হামলায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। অন্যদিকে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৯ হাজার ৬১ জনে। এই নিহতদের অধিকাংশই শিশু-নারী ও বেসামরিক লোকজন।
আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের অধিকাংশের মতে, ১৯৫৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ দেখছে মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চল।
সূত্র : রয়টার্স