বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইমলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি, কিন্তু গণতন্ত্রের চর্চা করি না। বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে এখানে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হয়নি। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে বিরোধে লিপ্ত হয়েছি। কিন্তু সহনশীলতার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা করলে আমরা অধিকার অর্জন করতে পারবো।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিনাজপুর সরকারি কলেজ মাঠে কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণজয়ন্তী ও গুণীজন সম্মাননা ২০২৪ উদযাপিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অত্র কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমার বিশ্বাস ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যারা আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, তারা আমাদের স্বপ্ন। সবচেয়ে বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন তারা। তরুণদের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা আছে এবং কর্মক্ষমতা আছে। দেশপ্রেমে উদ্ধৃত্ত হয়ে তরুণরা কাজ করছে। তারা আন্দোলন করছে প্রাণ দিচ্ছে, সেখানে আমরা হেরে যেতে পারি না। আমরা নিশ্চয়ই জয়ী হবো।
তিনি বলেন, যদিও স্বাধীনতার পরে একটা অবস্থা তৈরি হয়েছিল ক্রিয়েটিভ সৃজনশীল কিছু করা যেতো। আজকে আমরা যারা রাজনীতি করছি । আমাদের ব্যর্থতা ৫৩ বছরেও বাংলাদেশকে একটা সুখী, শান্তিময়, প্রেমময় ভালোবাসাময় একটি দেশ গড়তে পারলাম না। আমরা রাজনীতি নিয়ে সংকীর্ণতায় ভুগি। আমরা নৈতিকতার সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছি। আমরা যে জাতি, আমাদের গর্ব করে বলার কথা যে আমরা গর্বিত জাতি । কিছুদিন আগেও আমরা সেটা বলতে পারিনি। এখন আবার সেই আশা জেগে উঠেছে আমাদের মাঝে। আমরা আবার একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। সেই স্বপ্নটি হচ্ছে সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন একটা সুখী, সুন্দর, প্রেমময়, গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশকে নির্মাণ করার আমরা চেষ্টা করেছি। আমরা ৭১ সালে যুদ্ধেও ছিলাম, এরপরে গণতান্ত্রিক যুদ্ধে ছিলাম।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে সেই গণতান্ত্রিক যুদ্ধ শেষ হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা ঐক্যের যে যুদ্ধ সবাই মিলে একসঙ্গে দেশটাকে গঠন করবো তাকে নির্মাণ করবো তাকে একটা পথরেখা দেখাবে আজকে এই বয়সে এসে আমার কাছে মনে হয় এই জায়গায় আমাদের ব্যর্থতা আছে। সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আমাদের ছেলেরা জীবন দিয়েছে, রাজনৈতিক কর্মীরা জীবন দিয়েছে।
দেশের তরুণ-শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা অমিত সম্ভাবনাময়। তারা দেশপ্রেমের কথা, পরিবর্তনের কথা বলছেন। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ নির্মাণ করবার একটা পথও তারা দেখাতে পারেন। সুতরাং নেতিবাচক চিন্তা করলে হবে না।
“আমাদের পরস্পরকে সহনশীলতার মধ্য দিয়ে আনতে হবে, সম্মান করতে হবে। আমি যে রাজনৈতিক চিন্তাই করি না কেন, যদি দেশপ্রেম থাকে, দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই আজকে যে সুযোগ এসেছে, সেই সুযোগের যেন সদ্ব্যবহার আমরা করতে পারি।”
দিনাজপুর সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জাহেদা পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম আল আবদুল্লাহসহ বিভিন্ন সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষরা বক্তব্য রাখেন।